Saturday, December 6, 2025

নারীদের রাত দখলে দায়িত্ব বেড়েছে, লক্ষ্যভ্রষ্ট না হওয়ার অনুরোধ রিমঝিমের 

Date:

Share post:

নারী সুরক্ষা আর স্বাধীনতার দাবিতে একটা ফেসবুক পোস্ট, আর তাতেই রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার মহিলা। কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ছাড়া সাধারণ মানুষের আন্দোলন ঠিক কতটা তীব্র হতে পারে তার অভাবনীয় দৃশ্য ধরা পড়েছে স্বাধীনতার মধ্যরাতে। নারীদের রাত দখলে (Reclaim the Night Movement) জ্বলে উঠেছে নতুন দিনের মশাল। কিন্তু সেই আগুন নিভে যাবে না তো? যার আহ্বানে এত বড় একটা কান্ড ঘটে গেল বাংলার বুকে, সেই রিমঝিম সিনহা (Rimjhim Sinha) এখন ব্যস্ত আন্দোলনের তীব্রতাকে বজায় রাখতে। চিকিৎসক তরুণীকে যাঁরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে, ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি প্রতিটা মেয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লড়াইটা আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনীর।

দায়িত্ব বেড়েছে, যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। লক্ষ্যে পৌঁছাতে যেতে হবে অনেকটা পথ। তাই যে মানুষ রাতের দখল নিয়েছিলেন, যাঁরা প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিলেন, সেই মানুষকে আন্দোলনের রাস্তায় রাখাই এখন চ্যালেঞ্জ রিমঝিমের। তাঁর কথায়, ‘এটা কাঠামো বদলের লড়াই। একটা নতুন কাঠামো গড়ে তোলার লড়াই যা কিনা যা বদল ঘটাবে মানসিকতায়। ধর্ষণের পর খুন, তার বীভৎসতা ক্রমশ ধারাবাহিক হয়ে যাচ্ছে। অতীতের তুলনায় যা অনেক বেশি আগ্রাসী, হিংস্র, পৈশাচিক। মনে রাখতে হবে, নির্ভয়াকাণ্ড সারা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল বীভৎসতার জন্য। কিন্তু তার পর থেকে আরও ঘটনা ঘটেছে। সেগুলিও নারকীয়। শিউরে ওঠার মতো। হাথরস থেকে উন্নাও, কাঠুয়া থেকে আরজি কর— সর্বত্রই সেই বীভৎসতা বিরাজ করেছে। একটার পর একটা ঘটনা ঘটছে। পুলিশ কিংবা আদালতের কাছে গিয়ে সুরাহার চেষ্টা হচ্ছে বটে। কিন্তু ঘটনা থামছে না। তদন্ত, বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা কিছুতেই কাটছে না। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বিচার হলেও তা কখনওই এক বছর বা তার কম সময়ে শেষ হচ্ছে না। একটি ঘটনার তদন্ত বা বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই আরও বেশি হিংস্র নির্মম একাধিক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। এমন কোনও নীতি বা কাঠামোগত বদল হচ্ছে না, যা মানসিকতা পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। সেটাই আমাদের করতে হবে। এখন সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল, সিমলায় বিচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ!

সোশ্যাল মিডিয়া মানেই সেখানে শুধুমাত্র অশ্লীল আলোচনা বা তথ্য আদান-প্রদান নয়। এই সমাজ মাধ্যম কিভাবে সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে তা দেখিয়েছেন রিমঝিম। তার লড়াই কোন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয় বরং সেই মানসিকতার বিরুদ্ধে যা ক্রমাগত মহিলাদের আক্রমণ করে চলেছে। নারী মানেই তাঁকে ভোগ্যবস্তু আর মাংসপিণ্ড হিসেবে ধরে নেওয়ার ভাবনাতে কুঠারাঘাত করতে চান রিমঝিম। তাই এখন মূলত চারটি বিষয়কে ‘ফোকাস’ করে এগোতে চান তিনি।

১)এই ধরনের ঘটনায় নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত সুনিশ্চিত করা

২) স্কুল পাঠ্যক্রমে লিঙ্গসাম্যের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা

৩) রাতে সুরক্ষিত গণপরিবহণ

৪)কর্মস্থলে রাতে মহিলাদের জন্য নিরাপদ বিশ্রামকক্ষ

রিমঝিমের পোস্টার আহ্বানে রাত দখলের কর্মসূচি নজির গড়েছে। কিন্তু এখনও অনেক পথ হাঁটা বাকি। মানসিকতার বদল ঘটাতে তাই লড়াই করতে প্রস্তুত বঙ্গতনয়া।


spot_img

Related articles

কলকাতা-লন্ডন বিমান ভাড়া কলকাতা-মুম্বইয়ের থেকে কম! হয়রানিতেও জুটল না বিশেষ ট্রেন

লক্ষ লক্ষ দেশবাসী গত ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দেশের নানা প্রান্তে বিপর্যস্ত। কারো বিয়ে, কারো পরীক্ষা আটকে...

বাংলাই দেখায় পথ: BLO মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণের সিদ্ধান্তে বাধ্য হল কমিশন

বাংলায় মৃত্যু চার বিএলও-র। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। গোটা দেশে ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে বিএলও...

চিহ্নিত ‘অযোগ্য’দের তালিকা, আদালতের নির্দেশে প্রকাশ এসএসসি-র

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ফের এক তালিকা প্রকাশ এসএসসি-র। ২০১৬ এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ‘অযোগ্য’ চিহ্নিতদের...

কাজ করার সময়ই অসুস্থ BLO: হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা আরও বাড়ল

এসআইআর-এর সময় সীমা বাড়ানো হোক। এই দাবিতে রাজ্যের সিইও দফতরের সামনে লাগাতার আন্দোলনে বিএলও অধিকার রক্ষা মঞ্চ। যেভাবে...