চপ্পল নম্বরই পাহেচান, ২০ বছর পর ঘরে ফিরল ছেলে

আওয়াজ নয়, চপ্পল নম্বরই পাহেচান হয়ে দাঁড়াল। চটির উপরে সাদা কালিতে লেখা ২৪। তবে এই নম্বর পায়ের সাইজের নম্বর নয়। এই নম্বর হল জুতোর ক্রমিক নম্বর। আর সেই নম্বরেই কেল্লা ফতে। নম্বরের জুতো ধরেই হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে খুঁজে পেল পরিবার। প্রায় ২০ বছর পর ঘরে ফিরবে ছেলে।

মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা সুরেশ মুরাইয়া। বছর ২০ আগে রাগের মাথায় ভগ্নিপতিকে মোটর সাইকেল থেকে ফেলে দেন। এর ৭ দিন পর মৃত্যু হয় আহতের, তারপর থেকেই ঠাঁই হয় জেলে। কেটে যায় ২০ বছর। মধ্যপ্রদেশের জেল সূত্রে জানা গেছে, সুরেশ পূর্ণ শাস্তি নিয়েই খালাস পেয়েছেন। তবে স্মৃতিভ্রংশ হয়েছে। ভুলেছেন আগের স্মৃতি। এদিকে জেলে তৈরি আধার কার্ডে তাঁর নামটা পুরো নেই শুধু নয়, পুরো ঠিকানাই ভুল।

এদিকে এর মধ্যেই দাঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের থাকুরানিবেরিয়া ক্যানিং ১ ব্লকে এক মাঝবয়সী লোককে প্রায়ই দেখা যায় রাস্তার পাশে শুয়ে থাকে। পাশে রাখা একটা কালো রঙের চপ্পল, তাতে সাদা কালিতে লেখা ২৪। পথ চলতি মানুষ, স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যরা এমনকী স্থানীয় গ্রামের মানুষজনের প্রথমে সন্দেহ হওয়ায় যোগাযোগ করেন ক্যানিং থানার সঙ্গে। বড়বাবু সৌগত ঘোষ তাঁদের পরামর্শ দেন হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সালমা মণ্ডলের স্বামী রেকাউল মণ্ডল যোগাযোগ করেন সেই মতো। খোঁজ মিলতেই জানা গেল তাঁর গ্রাম সুদুর মধ্যপ্রদেশের নরসিমহাপুর। এরপর গ্রামে যোগাযোগ করতেই যা তথ্য পাওয়া গেল তাতে তো চক্ষু চড়কগাছ। এই ভবঘুরে কিনা খুনের দায়ে জেল খাটা আসামি?

এদিকে আসামি সংক্রান্ত জটিলতায় কেউ জড়াতে না চেয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। কেউই ছবি দেখে কিছুই বলে না। অনেক খুঁজে পাওয়া গেল সুরেশের মা কান্তিবাই মুরাইয়া। ছবি দেখেই হাউ মাউ কেঁদে ওঠেন। কী করে বাংলায় এল বুঝে উঠতে পারছে না গ্রামের কেউ। এবার বোঝা গেল ওই ২৪ নম্বরের রহস্য। ওই চটি জেলের দেওয়া, সুরেশ কারাগারের ২৪ নম্বর সেলেরই বন্দি। ইতিমধ্যে সুরেশের মা তাঁর ছবি দেখেও চিনেছেন। এখন শুধু ছেলেকে কাছে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরার অপেক্ষায় রয়েছেন বৃদ্ধা মা।

আরও পড়ুন- সন্দেশখালিতে নতুন ব্লক সভাপতি নিয়োগ তৃণমূলের

 

Previous articleসন্দেশখালিতে নতুন ব্লক সভাপতি নিয়োগ তৃণমূলের
Next articleমেয়ের ডায়েরির ‘ছেঁড়া পাতা’-র ছবি তাঁর কাছে রয়েছে, দাবি আরজি করের মৃত চিকিৎসকের বাবার