ত্রিপুরায় বন্যা পরিস্থিতি ভ.য়াবহ, মৃ.ত ১০:  ঘরছাড়া প্রায় ৩৪ হাজার

লাগাতার ভারী বর্ষণে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ত্রিপুরায়। প্লাবিত হয়েছে একাধিক এলাকা। এই অবস্থায় ত্রিপুরায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও, ঘরছাড়া হয়েছেন ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের কাছে সাহায্য চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোনে ত্রিপুরার পরিস্থিতি জানিয়ে আরও বেশি সংখ্যায় এনডিআরএফ কর্মীদের মোতায়েন করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। অগাস্ট মাসের এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ ত্রিপুরা, খোয়াই, গোমতী জেলা। ওই তিনটি জেলাতেই এক কিশোরী সহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ত্রিপুরার চারটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতিতে ১ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। উত্তর ত্রিপুরার  কৈলাশহর, ধর্মনগর, ধলাই জেলার কমলপুর, সেপাহিজলার বিশালগড় ও সোনামুড়া, উনাকোটি জেলার কুমারঘাট, লংট্রাইভ্যালি এবং গন্ডাচেরা, গোমতি জেলার সবুরু, সাবরুম, খোয়াই জেলার তেলিয়ামুরা ও খোয়াই, উদয়পুর, কারবুক ও অমরপুর ও  দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার সান্তিরবাজার এবং আগরতলা শহর সহ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সদর ও জিরানিয়া মহকুমার বেশ কয়েকটি এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

জোরকদমে উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দল। এই মুহূর্তে এই রাজ্যের নদীগুলিও বিপদসীমার উপরে বইছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় ত্রিপুরায় অবিরাম বৃষ্টিতে ভূমিধস ও ডুবে গিয়ে একই পরিবারের তিন সদস্য সহ কমপক্ষে ১০ জন মারা গিয়েছেন এবং দুজন আহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেই মনে করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই গোমতি জেলায় রেল লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ত্রিপুরায় ১০ টি লোকাল ট্রেন বাতিল করেছে।

এই পরিস্থিতিতে অসম রাইফেলসের চারটি বাহিনী বিভিন্ন জেলায় মোতায়েন করা হয়। বন্যার কারণে আটকে পড়া নাগরিকদের তারা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ত্রিপুরায় আজও বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল।

এরই পাশাপাশি ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল। প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম। বাংলাদেশের অভিযোগ, এই পরিস্থিতির জন্য ভারত দায়ী। ত্রিপুরার ডম্বুর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণেই বন্যা দেখা দিয়েছে পূর্বের জেলাগুলোতে। তবে এই অভিযোগ মানতে চায়নি ভারত। বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়েছে, ত্রিপুরার ডম্বুর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হচ্ছে বলে যা অভিযোগ করা হচ্ছে, তা একেবারেই সত্য নয়। গত কয়েকদিন ধরে ভারত ও বাংলাদেশের নানা জায়গায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে।দুদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদী সংলগ্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।