Thursday, August 21, 2025

যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, হাতেপায়ে ধরেও ভর্তি হচ্ছে না! ডাক্তারদের কর্মবিরতির বলি অসহায় মানুষ

Date:

Share post:

সুপ্রিম কোর্ট বলার পরেও কর্মবিরতির (Work S) কর্মসূচিতে অনড় এ রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের একাংশ। আর জি কর কাণ্ডের জেরে তাদের আন্দোলন, প্রতিবাদ, বিচারের দাবি একেবারেই ন্যায়সঙ্গত। সাধারণ মানুষও বিচারের দাবিতে পথে নামছেন, প্রতিবাদ করছেন। কিন্তু চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জন্য ভুগতে হচ্ছে অজস্র রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-পরিজনকে। সরকারি হাসপতালগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে মৃত্যুর ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। রোগীকে বাঁচাতে অনেক সাধারণ ও গরিব পরিবারকে সামর্থের বাইরে গিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল বা নাসিংহোমে নিয়ে যেতে হচ্ছে। যেখানে মোটা টাকার বিল পরিশোধ করতে কালঘাম ছুটছে।

আর জি কর কাণ্ডের পর থেকে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে ডাক্তারদের লাগাতার কর্মবিরতির (Work Seaze) জেরে রোগী ভোগান্তির একাধিক ঘটনা সামনে আসছে। কোথাও তীব্র শ্বাসকষ্টের রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো গেল না। কোথাও আবার ঘণ্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রেখেও ডাক্তারের অভাবে অপারেশন হল না কিশোরের। কেউ আবার দুর্ঘটনায় জখম হয়ে সময় মতো চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন।

এই যেমন, রাজ্যের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল এসএসকেএম অসুস্থ মা-কে নিয়ে এসেছিলেন বাগনানের এক বাসিন্দা।তাঁর মা প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। পরিবারের কথায়, দ্রুত ভর্তি করানোর দরকার ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভর্তি নিল না। এভাবে চললে আমাদের গরিব মানুষ কোথায় যাবে! বিনা চিকিৎসায় কি মরতে হবে সকলকে? অন্য এক রোগীর আত্মীয়ের কথায়, ৬ ঘন্টা ধরে অনুরোধ করে, হাতেপায়ে ধরেও ভর্তি নিচ্ছে না। ইমার্জেন্সিতে ফেলে রেখেছে। অক্সিজেন চলছে। বলছে, ক’দিন পর নিয়ে আসুন। কিন্তু, অক্সিজেন খুলে ফেললে আবার সমস্যা তৈরি হবে। অপরাধের সাজা সাধারণ মানুষ পাবে কেন?

এক ভদ্রলোক টাইলসের কাজ করেন। আলিপুরে একটি বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে পড়ে যান। কোমর ভেঙে যায় তাঁর। তড়িঘড়ি তাঁকে পিজি হাসপাতালে আনা হলে সাফ না করে দিয়েছেন ডাক্তাররা। তাঁর সঙ্গে ব্যক্তি বলেন, “একটা ইনজেকশন দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। বলছে, পরের সপ্তাহে নিয়ে আসুন। ডাক্তার নেই। ভর্তি হবে না। সকলেই খুনি, ধর্ষকের শাস্তি চান। কিন্তু যেভাবে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এর বিচার করবে কে!

একই ছবি দেখা গিয়েছে এনআরএস হাসপাতালে। আউটডোর থেকে রোগীকে ভর্তি করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু কাগজপত্র রেডি হওয়ার পরেও ভর্তি করানো যায়নি রোগী। রোগীদের চিকিৎসা না করে বিচার চাইছে! এটা কোনও সঠিক আন্দোলন হতে পারে না। রোগী দেখেও তো আন্দোলন চালানো যায়।

ট্রলিতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন বারাসাতের এক বাসিন্দা। নার্ভের সমস্যায় জেরবার তিনি। তাঁর পরিবারের কথায় “আমাদের বাড়িতেও মেয়ে আছে। আমরাও চাই, বিচার হোক। কিন্তু এভাবে রোগী পরিষেবা না দিয়ে মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কেন, এটা কি সঠিক বিচার?”

আরও পড়ুন: “খাবার চাই না, ঘুমোতে চাই”, জেলে ঢুকেই আর্জি সঞ্জয়ের!

 

spot_img

Related articles

‘নোরা ফাতেহি’ হতে হবে! স্ত্রীকে জোর করে শরীরচর্চা করিয়ে গর্ভপাত শিক্ষকের

যোগীরাজ্যে স্কুলশিক্ষকের ফ্যান্টাসির চূড়ান্ত নমুনা! স্ত্রীকে হতে হবে রোগা ছিপছিপে চেহারার। আর সেই চেহারা বানাতে গিয়েই স্বামীর নির্মম...

গান-কবিতায় সংসদে সরব তৃণমূল! বয়কট রাজ্যসভার চা-চক্র

বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষ দিনে সংসদ উত্তাল হল বাংলা গান, কবিতা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদে। সংসদের অন্দরে যেমন কালাকানুন, এসআইআর, ভাষাসন্ত্রাসের...

নওশাদ-সহ আইএসএফ সমর্থকদের জামিন দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত

ধর্মতলার কর্মসূচির নামে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা। বুধবার গ্রেফতার করা হয় ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে (Naushad Siddiqui)। বৃহস্পতিবার নওশাদ-সহ...

নোবেল খুঁজতে ব্যর্থ CBI, রাজ্য পুলিশ উদ্ধার করল বুলার পদ্মশ্রী: পুলিশও পদক পাক চান সাঁতারু

হুগলির হিন্দমোটরে সাঁতারু বুলা চৌধুরীর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া পদক অবশেষে উদ্ধার করল রাজ্য পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে...