আর জি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে জুনিয়র ডাক্তারদের লাগাতার আন্দোলনে ব্যহত হচ্ছে রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা। যদিও সিনিয়ার ডাক্তাররা প্রাণপাত পরিশ্রম করে কোনও রকম ভাবে রোগী পরিষেবা চালু রেখেছেন। এমত পরিস্থিতিতে রাজ্যজুড়ে হাসপাতালগুলির হাল হকিকত জানতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

সোমবার জুনিয়র ডাক্তারদের লালবাজার অভিযান চলাকালীনই স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে হাসপাতালের কাজকর্ম কেমন চলছে তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিস্তারিত ভাবে খোঁজ খবর নিয়েছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে। জুনিয়র ডাক্তারদের অনুপস্থিতিতে কোন কোন য়ায়গায় পরিষেবা সর্বাধিক ব্যহত হচ্ছে, অস্ত্রপচার,জটিল রোগের চিকিত্সা হচ্ছে কিনা। হাসপাতাল গুলিতে সিনিয়র ডাক্তারদের উপস্থিতির হার কেমন মূলত এসব ব্যপারেই মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ খবর নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

আরজি কর কাণ্ডের পর রাত্তিরের সাথী প্রকল্পের আওতায় হাসপাতালের নিরাপত্তা পরিকাঠামো উন্নয়নে একগুচ্ছ পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়েছে। এর বাস্তবায়নের জন্য শীঘ্রই অর্থের সংস্থান করা হবে বলেও অশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মুখ্যসচিবের সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করেন স্বাস্থ্য সচিব। উল্লেখ্য মহিলা কর্মজীবীদের সুরক্ষায় রাত্তিরের সাথী প্রকল্প ঘোষণা করেচে রাজ্য সরকার। যেখানে কর্মস্থলে মহিলাদের জন্য আলাদা শৌচালয় ও বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। মহিলা কর্মজীবীদের নিরাপত্তার জন্য রাতে কর্মস্থলে রাখা হবে বিশেষ মহিলা স্বেচ্ছাসেবক। প্রতিটি কর্মস্থল সিসি ক্যামেরার নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে। ২৪ ঘন্টা ধরে চলবে বিশেষ নজরদারি। মহিলা কর্মজীবীদের জন্য বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু হচ্ছে। আপাতত ১০০ ও ১১২ নম্বরে সাহায্য চেয়ে ফোন করতে পারবেন। সেই সঙ্গে হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজগুলিতে ঢোকা প্রত্যেকেরই শ্বাস পরীক্ষা করা হবে। অর্থাৎ কেউ মদ্যপ অবস্থায় রয়েছেন কিনা, তা দেখা হবে। মহিলা কর্মজীবীদের যৌন নির্যাতন রুখতে প্রতিটি হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ-সহ বিভিন্ন অফিসে বিশাখা কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল-মেডিকেল কলেজ সহ বিভিন্ন অফিসে মহিলাদের নৈশকালীন ডিউটি বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে মহিলা কর্মজীবীর সঙ্গে তাঁর পরিচিত কিংবা কোনও মহিলা সঙ্গিনীকে ডিউটি দেওয়া হয় তার উপরে বিশেষ জোর দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন- সিজিও কমপ্লেক্সে থেকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে গিয়ে সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার সন্দীপ


এছাড়াও প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মহিলা হস্টেলে রাত ভর চলবে বিশেষ পুলিশ পেট্রলিং। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন থেকে চিকিৎসক-সহ প্রতিটি কর্মীকে গলায় ঝোলাতে হবে সচিত্র পরিচয়পত্র। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা আধিকারিক নিযুক্ত করা হচ্ছে। তাঁরাই পুরো নিরাপত্তা তদারকির দায়িত্বে থাকবেন।

