রাজ্যের হাসপাতালগুলির নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই। পুলিশের সহযোগিতায় কীভাবে সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে রাজ্যের সব হাসপাতালের অধ্যক্ষ সহ সিনিয়র ও জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের পুলিশের সঙ্গে বৈঠকের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়ে কাজে যোগ দিতে পারেন যাতে, তার জন্যও নিরাপত্তা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। বৃহস্পতিবার বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনার নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে এজেন্সির মাধ্যমে নিরাপত্তা দেওয়া হয়। সম্প্রতি আর জি করের ঘটনার পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া হয়। তবে বাকি কলকাতা সহ গোটা রাজ্যের সব হাসপাতালে নিরাপত্তা কীভাবে দেওয়া হবে, তা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে পুলিশকে বৈঠকের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তিনি বলেন, “হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্ব হাসপাতালের এমএসভিপির। যদি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এজেন্সি ব্যর্থ হয় এজেন্সিকে ব্ল্যাক লিস্টেড করে অন্য এজেন্সি নেবে। যে এজেন্সি ব্যর্থ হবে তার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে, তার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেস হবে। তাকে ব্ল্যাক লিস্টেড করা হবে। যখন কোনও এজেন্সিকে নিয়োগ করা হবে তাকে এপিডেভিট করে বলিয়ে নেওয়া হবে সব নিয়ম।”

পুলিশের উপর গোটা রাজ্যের নিরাপত্তার দায়িত্ব, তাই প্রত্যেক হাসপাতালের নিরাপত্তা সংস্থার দায়িত্ব নেওয়া পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তবে এজেন্সি দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজে পুলিশকে সাহায্য করার নির্দেশ দেন তিনি। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, “পুলিশের ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সাতদিনের প্রশিক্ষণের পরে তবে নিয়োগ হবে। নিয়োগের সময় হাতে প্রশিক্ষণের নির্দেশিকা থাকবে।”

সেই সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যাতে চিকিৎসক ও পুলিশ সরাসরি আলোচনা করে নিতে পারে, তার জন্য বৃহস্পতিবার এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সকলকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশ, সব অধ্যক্ষ – মেডিক্যাল কলেজ, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, জেলা হাসপাতালের অধ্যক্ষরা উপস্থিত থাকবেন ভিডিও স্ক্রিনে। জুনিয়র ও সিনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ তাঁরাও থাকবেন। জুনিয়র ডাক্তারদের গুরুত্ব বেশি দিয়ে তাঁদের আটজনের প্রতিনিধি দল থাকবেন। সিনিয়র ডাক্তারদের চারজনের প্রতিনিধি থাকবেন। এছাড়াও খোলা আমন্ত্রণ থাকবে ইচ্ছুকদের যোগ দেওয়ার জন্য। তিনি বলেন, “কোন হাসপাতালে কী কী কাজ – আলো, জল, শৌচালয়, অন্ধকার যাতে কোথাও না থাকে তা দেখে নিতে হবে।”
