তৃতীয় দিনেও অবস্থানে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctor)। বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে সিনিয়র ডাক্তারদের (Senior Doctor) অনুরোধ, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। হলে তাঁরাও কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হবেন। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী মধ্যস্থতাতেই সমস্যার সমাধান চাইছেন সিনিয়র ডাক্তাররা।বারবার সরকারের তরফ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও নানা শর্ত দিয়ে তা ফেরাচ্ছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। বুধবার, সন্ধেয় নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharjee) বলেন, শর্ত দিয়ে খোলা মনে আলোচনা হয় না। অনমনীয় মনোভাব কর্মবিরতিতে থাকা জুনিয়র চিকিৎসকদের (Junior Doctor) নিয়ে শিল্প বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রীও স্পষ্ট বলন, “ওরা কেন এত জেদ করছে? ওরা যা বলবে সব মানতে হবে? আমি তো ওদের জন্য সব সময় দিতে রাজি। সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার তো সবাইকে মানতে হবে। ওদেরকে আরও একবার বোঝাও।” এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের তৃতীয় দিনে বৃহস্পতিবার অবস্থান মঞ্চে পৌঁছন সিনিয়র চিকিৎসকরা। ছিলেন Indian Medical Association , Medical Service Centre, Joint Platform of Doctors , Service Doctors Forum-এর সদস্যরা। পরে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে তাঁরা জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের পাঁচ দফা দাবি অত্যন্ত ন্যায্য। তাঁদের কথায়, “আমরা প্রত্যেকে অভয়ার বিচার চাই। যদি একজন জুনিয়র চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করা হয় তাহলে আমরা সকলে কর্মবিরতিতে শামিল হব।”
সিনিয়র চিকিৎসকদের মতে, ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বসবেন কি না, সে বিষয়ে চিঠিতে উল্লেখ ছিল না। পাশাপাশি, তাঁরা জানান, অতীতে নবান্নের অনেক বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং হয়েছে। সুতরাং জুনিয়র ডাক্তাররা বৈঠকের যে সরাসরি সম্প্রচারের আবেদন করছেন তা ন্যায্য। সেটা না মানার কোনও কারণ নেই।

সিনিয়র ডাক্তারদের মতে, আন্দোলনকারীরা অবশ্যই কাজে ফিরতে চান। কিন্তু যখন দোষীরা গ্রেফতার হয়নি এবং প্রত্যেকটা মেডিক্যাল হাসপাতালেই এখনও হুমকি এবং সিন্ডিকেট চক্রের পান্ডারা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেখানে তাঁরা নিরাপদ বোধ করছেন না। জুনিয়র ডাক্তারদের অবিলম্বে কাজে ফিরবার জন্য সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্লেখ করে পরোক্ষে চাপ বাড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ সিনিয়র ডাক্তারদের। প্রতিদিন সংবাদপত্রে অভয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু ও ধর্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে যে সমস্ত হাড়হিম করা তথ্য এবং দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত যে বিশাল চক্রের কথা সামনে আসছে সে বিষয়ে সরকারি তরফে কোনও বক্তব্য শোনা গেল না বলে অভিযোগ তাঁদের।

সিনিয়র ডাক্তারদের আবেদন, জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করুন। একই সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তাদের উপর যাতে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তার আবেদনও জানানো হয়। সেটা হলে তাঁরাও কর্মবিরতিতে যাবেন বলে মন্তব্য করেন সিনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা জানান রোগী পরিষেবা ঠিক রাখতে সিনিয়র ডাক্তাররা অতিরিক্ত পরিশ্রম করছেন। সরকার দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক- দাবি সিনিয়র ডাক্তাররা।

ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল ভেঙে দেওয়ার দাবি করা হয়। সিনিয়র ডাক্তারদের দাবিগুলি ই-মেইল করে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হবে।
