মানুষকে ডোবালে ডিভিসির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখব না: তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

ডিভিসি অতিরিক্ত ছাড়া জলে বানভাসি দক্ষিণবঙ্গ। প্লাবিত মানুষের পাশে থাকতে দুদিন ধরে জলের মধ্যে ঘুরছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার, পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন মমতা। আর সেখানে গিয়ে DVC-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, “মানুষকে এ ভাবে ডোবালে ডিভিসির সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না।“বুধবার হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুরের পরে বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের (East Medinipur) পাঁশকুড়া ও হাওড়ার (Howrah) উদয়নারায়ণপুর পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃষ্টি না হলেও DVC-র মাত্রাতিরিক্ত ছাড়া জলে জলমগ্ন দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ নদী তীরবর্তী এলাকা। এদিন পাঁশকুড়ার পরে উদয়নারায়ণপুরে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ”সবসময় অন্যদের জলে বাংলা ভাসে। উত্তরবঙ্গে বন্যা হয় ভুটানের জলে। মালদহে বিহারের জল ঢুকে প্লাবিত করে। আর ডিভিসির যখন তখন ছাড়া জলে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলো ভাসে। বার বার ওদের বলা সত্ত্বেও প্রতিবার এক কাজ করে।” ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টি। রাস্তা জলমগ্ন। দুর্ঘটনা এড়াতে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত, ”আগামী তিনদিন ঝাড়খণ্ড সীমানা সিল করা থাকবে। এটা ডিজি রাজীব কুমারকে বলব।”ডিভিসি (DVC) জল ছাড়ার নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”মানুষকে এ ভাবে ডোবালে ডিভিসির সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না।’’ এই বিষয় নিয়ে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা।

এদিন কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ”কেন্দ্র তিন বছর ধরে টাকা দেয় না। আমরা তাই নিজেদের অর্থেই ১১ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আরও একলক্ষ বাড়িয়ে দেব, ডিসেম্বরের মধ্যে তৈরি হবে। টাকা জোগাড় করতে আমাদের কষ্ট হয়। তবু এই কাজ তো করতে হবে। নাহলে প্রতিবার বন্যা রাজ্যের কাঁচা বাড়িগুলির ক্ষতি হয়। এখনও রাজ্যে ৫০ লক্ষ কাঁচা বাড়ি রয়েছে।”

পূর্ণিমায় ভরা কোটাল। নদীগুলিতে বেড়েছে জলস্তর। সে বিষয়ে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”এই জল নামতে তিন, চারদিন লাগবে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে চাষের জমিগুলির। তবে শস্য বিমা রয়েছে সরকারের তরফে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেসব টাকা দেওয়া হবে কৃষকদের।” ত্রাণশিবিরগুলিতে পর্যাপ্ত খাদ্য, বস্ত্র মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

পাঁশকুড়ার পরে উদয়নারায়ণপুরেও ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”ডিভিসি সবসময়ে আমাদের বিপদে ফেলবে, আর আমরা সম্পর্ক রাখব নাকি? আমি ওদের বলেছি, যখন ৮০ শতাংশ জল ভরে যায়, তখন আপনারা একটু একটু ছাডুন, তাহলে আমাদের অসুবিধা হয় না। কিন্তু ওরা তা করবে না। তাছাড়া বিভিন্ন নদীগুলিতে ড্রেজিং হয় না অনেকদিন। তাই এই অবস্থা।”









Previous articleNDA সমর্থিত নীতিশ রাজ্যে ২১টি দলিত বাড়িতে আগুন দুষ্কৃতীদের!
Next articleতৃণমূল নেতার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি দুষ্কৃতীদের, অল্পের জন্য রক্ষা