আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার নৃশংস ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর লাগাতার নানা জায়গায় বিভিন্ন গুজব ছড়ায়। বারবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে, সিসিটিভ ফুটেজ নিয়ে, কলকাতা পুলিশের গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। কিন্তু ৫৮ দিনের মাথায় যখন সিবিআই প্রথম চার্জশিট জমা দেয় তখন, দেখা যায় কলকাতা পুলিশ যে গ্রেফতারি করেছিল সেটাই সঠিক। ময়নাতদন্তে কোনও গাফিলতি নেই। কারচুপির কোনও প্রমাণ মেলেনি। শুধু তাই নয়, এই ধর্ষণ-খুনে এখনও ধৃত সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। সুতরাং, কলকাতা পুলিশ যে একজনকে গ্রেফতার করে তদন্ত এগিয়ে ছিল- তা সঠিক পথেই এগোচ্ছিল। মঙ্গলবার সন্ধেয় চার্জশিটের কপি হাতে নিয়ে এই দাবি করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ।
সোমবারই চার্জশিট শিয়ালদহ আদালতে জমা দিয়েছে সিবিআই। নিয়ম মেনে সেই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইকেও। আর সেখানেই দেখা যাচ্ছে, চিকিৎসক-পড়ুয়ার ময়নাতদন্তে কোনও গাফিলতি হয়নি বলে চার্জশিটে উল্লেখ। নিয়ম মেনেই ময়নাতদন্ত হয়েছে। কুণাল বলেন, এখানে ময়নাতদন্ত করা চিকিৎসককে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই, ছিলেন এইমসের চিকিৎসকরাও। কিন্তু সেখানে কোনও কারচুপির অভিযোগ মেলেনি। অর্থাৎ ময়নাতদন্তে যে রগমিলের অভিযোগ উঠছিল চার্জশিটে তা সব খারিজ হয়ে গেল।
২১৩ পাতার চার্জশিটে ঘটনার ও তদন্তের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা রয়েছে। তরুণীর ধর্ষণ-খুনের পরে বারবার উঠছিল গণধর্ষণ, খুনের পরে ধর্ষণের গুজব। কিন্তু ময়নাতদন্তের নথি বলছে অভিযুক্ত সঞ্জয় প্রথমে ঘুমন্ত অবস্থায় তরুণীকে মারধর করে করায় তাঁর থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের হাড় ভেঙে যায়। তিনি অচৈন্য হয়ে পড়লে ধর্ষণ করা হয়। এর পরে মৃত্যু সুনিশ্চিত করতে শ্বাসরোধ করা হয়।
আরও পড়ুন- বিজেপির ভরাডুবির বাজারে ভূস্বর্গে ১ আসন বামেদের, খাতা খুলল আপ
নিহত চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের সময়ে উপস্তিত ছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররাও। রিপোর্টে তাঁরা সইও করেন। পরেও কারচুপির অভিযোগ তোলা হয়। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কুণাল বলেন, চার্জশিটে দেখা যাচ্ছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কোনও গরমিল করা হয়নি।
একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইয়ের স্টেটাস রিপোর্টে জানায় সন্তুষ্ট। অথচ শুনানিতে বিভিন্ন কথা তোলে। যে কথা তদন্তকারী সংস্থা আদালতে তোলে-সেই কথা চার্জশিটে কিন্তু বলেনি। উল্টে এই চার্জশিট অনুযায়ী, যে পথে কলকাতা পুলিশ তদন্ত করছিল-সেটা ঠিকই ছিল। তাদের অধীনে হওয়া তদন্তের অংশ সঠিক। ময়নাতদন্তও ‘নির্ভুল’।