Saturday, August 23, 2025

‘ডানা’র দাপট, ঝড়-বৃষ্টিতে তিন জেলায় শস্য হানি ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে

Date:

ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রকোপ এরাজ্যে তেমন না পড়লেও ঝোড়ো হাওয়া এবং প্রবল বর্ষণে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া ও হুগলি থেকে শস্য হানির খবর মিলেছে। তিন জেলা মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল দুর্য়োগের কারণে নষ্ট হয়েছে বলে কৃষি দফতরের প্রথমিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে । এর মধ্যে শুধুমাত্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই ২০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।

রাজ্যের কৃষি দফতরের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, একটানা বৃষ্টিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ২০ হাজার হেক্টর জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছিল। অনেক জায়গায় ধানগাছ নুইয়ে পড়েছে। তার ওপর জল জমে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। এছাড়াও ৩০০০ হেক্টর জমিতে থাকা ফুল, সব্জি এবং পান চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রসাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির এই প্রাথমিক রিপোর্ট রাজ্য কৃষি দফতরকে পাঠানো হয়েছে। অনেক জায়গায় মাছের ভেড়ি এবং পুকুর ভেসে গিয়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট পুরোপুরি জলের তলায়। ধান ও মাছ দু’টোতেই ক্ষতির আশঙ্কা বেড়েছে। হুগলি জেলাজুড়ে প্রায় ১২০০ হেক্টর জমির সবজি য়ার ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মূলত, জল জমে যাওয়ার কারণেই সবজি চাষে তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

হাওড়া জেলাতেও গ্রামীণ এলাকায় চাষবাসের প্রভুত ক্ষতি হয়েছে। পুজোর মুখে বন্যার জলে চাষের জমি নষ্ট হয়েছিল। সাম্প্রতিক দুর্যোগ শীতকালীন সবজি চাষেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বাগনান, দেউলটি সহ ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত এলাকাগুলিতেও জল জমে ফসল পচে গেছে। এর ফলে কালীপুজোতেও ফুলের দাম বাড়তে পারে পারে। পাশাপাশি মরসুমি ফুলের চাষ শুরু করাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উদয়নারায়ণপুরের আলু বিখ্যাত। কিন্তু এই বৃষ্টিতে যেভাবে মাটি ভিজে আছে, তাতে আলু বসানোই সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন কৃষকরা। দানা তার ঝড়ের দাপট এ রাজ্যে দেখায়নি ঠিকই। কিন্তু হাতে না মারলেও, ভাতে মেরে দিয়েছে।

প্রবল বর্ষণ শুক্রবার সকাল ৭টা পর্যন্ত সেই ঝড়ের দাপট চলে। আবার এ রাজ্যে সেই ঝড়ের দাপট সেভাবে দেখা না গেলেও গতকাল সারাদিন প্রবল বৃষ্টিতে ভিজেছে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি। বিশেষ করে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং দুই মেদিনীপুর। এদিন অর্থাৎ শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টি কিছুটা কমতেই এ রাজ্যের কোথায় কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার হিসাব কষা শুরু হয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন দুর্যোগের কারণে যে সব কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বাংলা শস্য বিমা যোজনায় নাম নথিভূক্তিকরণের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে।

আরও পড়ুন- আরজি করে গণ কনভেনশনে থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে সরব জুনিয়র ডাক্তাররা

Related articles

ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে তৎপর রাজ্য! জেলাগুলিকে একগুচ্ছ কড়া নির্দেশ মুখ্যসচিবের 

রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় শনিবার নবান্নে জেলাশাসক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব...

দায় বেসরকারিকরণ নীতির! মোদিরাজে পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক কর্মী

মোদি সরকারের আমলে বিগত পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক সরকারি কর্মী। সম্প্রতি লোকসভায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল কেন্দ্র।...

পুজোর আগে প্রায় দ্বিগুণ দুধ উৎপাদনে বাংলার ডেয়ারি 

কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে প্যাকেটজাত দুধের জোগান বাড়াতে রাজ্য সরকারি ব্র্যান্ড বাংলার ডেয়ারি বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। পুজোর...

পিছনে দৌড়! স্নাতক স্তরে বৈদিক গণিত আনার চেষ্টা UGC-র

গোটা বিশ্ব গণিতের ক্ষেত্রে যেখানে নতুন উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে আসছে, সেখানে ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছন দিকে হাঁটা শুরু...
Exit mobile version