Thursday, August 28, 2025

কেন্দ্রের বঞ্চনার শিকার বাংলা: ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়া সম্মেলনীতে সরব ব্রাত্য

Date:

রাজ্যে ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের আগে প্রতি এলাকায় বিজয়া সম্মিলনী করে জনসংযোগের ঝড় তুলছে তৃণমূল। একই দিনে রাজ্যের শাসকদলের প্রথম সারির নেতারা কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে একটি, কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে একাধিক বিজয়া সম্মিলনী করেছেন। সোমবার কলকাতা পুরসভায় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ থেকে তৃণমূলের শীর্ষ নেতত্ব।

সোমবার কলকাতা পুরসভায় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের মানুষের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন রাজ্যের বকেয়া কেন্দ্র দিচ্ছে না। আমাদের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি পর্যন্ত গিয়েছিলেন রাজ্যের বকেয়া আদায় করতে। কিন্তু প্রতিহিংসাপরায়ণ বিজেপি আমাদের সাংসদদের কৃষি ভবন থেকে মেরে বের করে দিয়েছিলেন। তাতেও থেমে থাকেনি রাজ্যের উন্নয়ন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের কোষাগার থেকে সাধারণ মানুষের প্রাপ্য একশো দিনের টাকা, আবাসের টাকা সব সময়মতো দিয়েছেন।

বিজেপিকে একহাত নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ২০২১ সালের আগে তারা বলেছিল আপ কি বার, ২০০ পার। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলের পর দেখা গেল ২০০ তো দূর, তিন অঙ্কেরও ধারেকাছে পৌঁছাতে পারেনি তারা। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপিকে রাজ্যের মানুষ প্রত্যাখাত করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গতকালের বক্তব্যে আবার সেই বিধানসভার আগের পুরানো বক্তব্য ফের শুরু করেছেন। ব্রাত্য আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যে উন্নয়েনে ভরিয়ে দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে রাজ্যের মানুষ স্বাধীনভাবে দুর্গাপুজো-ঈদ-বড়দিন পালন করতে পারছেন। আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গই ভারতে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ওদিকে বিজেপি গোটা দেশে ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে রাজনীতি করছে। বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি।

আরজি করের প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেন, ঘটনাটি সত্যিই নিন্দনীয়। আমরাও শাস্তি চাই। কিন্তু এর আড়ালে বিরোধীরা রাজনীতি করছেন। কর্মবিরতি চলাকালীন সাধারণ মানুষরা চিকিৎসা পাননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানবিকতার সঙ্গে ডাক্তারদের কাছে গেছেন। প্রত্যাখাত হয়েছেন, কিন্তু উত্তেজিত হননি। মাথা ঠান্ডা রেখে ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। অভিভাবকের মতো ডাক্তারদের বুঝিয়েছেন। প্রায় সব দাবিই মেনে নিয়েছেন।

আসছে ২০২৬। আরও এক বিধানসভা নির্বাচন এরাজ্যে। যে নির্বাচনে ২৫০টির বেশি আসনে জয়ী হবে তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের হাজারও কুৎসা উড়িয়ে রাজ্যে চতুর্থবারের মতো প্রতিষ্ঠিত হবে মা-মাটি-মানুষের সরকার। এদিনের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে বক্তব্য রাখতে এসে একথা বলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ।

কুণাল আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে উন্নয়নের জোয়ার চলছে। রাজ্যের প্রতিটি পরিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে সামিল হয়েছেন। তৃণমূল কর্মীদের উচিৎ সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব উন্নয়নমূলক কাজকর্মগুলি তুলে ধরা। পাশাপাশি বাংলার উপর কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে বঞ্চনা করছে তারও পরিসংখ্যান সহ প্রমান তুলে ধরেন তিনি। বিজেপি রাজ্যে যে প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি করছেন তারও তীব্র বিরোধীতা করে তিনি।

পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি যে বিরোধীরা কুৎসা চড়াচ্ছে তারও তীব্র বিরোধীতা করেন কুণাল। সিপিএমের সুশান্ত থেকে তন্ময়ের প্রসঙ্গ টেনে সিপিএমের তুলোধনা করেন তিনি। আরজি করের প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, আরজি করের ঘটনা সত্যিই নিন্দনীয়। আমরা সত্যিই এর বিচার চাই। অপরাধী কড়া শাস্তি পাক। কলকাতা পুলিশ ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে। সিবিআই পর্যন্ত বলেছে কলকাতা পুলিশের তদন্ত ঠিক। কিন্তু বিরোধীরা ডাক্তারদের উসকানি দিচ্ছে। ধর্মঘট চালিয়ে যেতে মদত দিয়েছে। জ্যোতি বসু তো ডাক্তারদের মেরে তুলে কর্মবিরতি হাটিয়ে দিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানবিকভাবে, অভিভাবকের মতো ডাক্তারদের কথা শুনেছেন। আলোচনায় বসেছেন সমস্যা সমাধানের জন্য। ওদিকে সাধারণ মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে প্রাইভেটে চিকিৎসা করাতে বাধ্য হচ্ছেন। আমরা আরজি করের পাশাপাশি উন্নাও থেকে হাথরাস, সাক্ষী মালিক থেকে আনন্দ মার্গ, মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্র, সব অন্যায়েরও জাস্টিস চাই।

আরও পড়ুন- বুধবার বাগানের সামনে হায়দরাবাদ, প্রতিপক্ষকে সমীহ বাগান কোচের

Related articles

সাত লুকের ‘বহুরূপ’ সোহমের, চ্যালেঞ্জ নিয়ে চমকে দিলেন অভিনেতা

যা কখনও হয়নি তা এখন হবে, এবার হবে। সেলিব্রেটিদের রিল - রিয়েলের আলাদা রূপ আর লুক নিয়ে কম...

উন্মুক্ত শৌচমুক্ত ৯৪ পুরসভা, স্বচ্ছতার শংসাপত্র বাংলাকে

শহরাঞ্চলে আর খোলা শৌচের দৃশ্য নেই। পুরসভাগুলির উদ্যোগ এবং পুর দফতরের তদারকিতে উন্মুক্ত শৌচমুক্ত হয়েছে কলকাতা সহ রাজ্যের...

ফাঁকা কেন্দ্রগুলিতে দ্রুত ইআরও–এইআরও নিয়োগের নির্দেশ কমিশনের 

ফাঁকা পড়ে থাকা একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (ইআরও) এবং অ্যাসিসটেন্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (এইআরও) নিয়োগের...

নথিভুক্ত অথচ নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে তলব করল কমিশন 

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ফের সক্রিয় হল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। নথিভুক্ত হলেও কার্যত নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে...
Exit mobile version