সন্ধে নামতেই দর্শনার্থীদের ঢল! রাজ্যজুড়ে জমজমাট কালী আরাধনা

রাজ্যজুড়ে শক্তির আরাধনা। কলকাতা থেকে কামাখ্যা। বীরভূম থেকে বারাসাত। কালীপুজো উপলক্ষ্যে দিকে দিকে সাড়ম্বর আয়োজন। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথির গভীর রাতে যোগিনী পরিবৃতা হয়ে আবির্ভূতা হন মা কালী। জগতে কল্যাণ এবং শান্তি স্থাপনের জন্য ভক্তরা দেবীর আরাধনা করেন।

প্রতি বছরই কালীপুজোকে কেন্দ্র করে অগণিত ভক্তের সমাগম হয় দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে (Dakshineswar Kali Temple)। এবারও কালীপুজোকে (Kalipuja 2024) কেন্দ্র করে দক্ষিণেশ্বর জমজমাট। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ১৭০তম বর্ষের পুজোয় এবার থিমের ছোঁয়া। আজ কালীপুজোর রাতে বাংলার লোকসংস্কৃতির আবহে মুখরিত হবে ভবতারিণীর মন্দির প্রাঙ্গণ। মহিলাদের ঢাকের বাদ্যি থেকে শুরু করে ধুনুচি নাচ, প্রদীপের আরতি, উলু-শঙ্খ ধ্বনিতে চার প্রহরের পুজো ভবতারিণীর মন্দিরে। কালীপুজোকে (Kalipuja) কেন্দ্র করে দক্ষিণেশ্বর মন্দির আলোর মালায় সেজেছে। মন্দিরে বসেই রাতভর পুজো দেখার সুযোগ রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য।

সাড়ম্বরে কালীঘাটে (Kalighat Temple) কালীপুজোর (Kali Puja) আয়োজন। কালীপুজোর দিনে কালীঘাটের মা কালী পূজিত হন মা লক্ষ্মী রূপে। কালীঘাটে মা কালীকে দুপুরে পোলাও, শুক্ত, পাঁচ রকমের ভাজা, চিংড়ি-পোনা মাছ, বলির পাঁঠার মাংস, চাটনি পায়েস, পান ও জল সহযোগে ভোগ নিবেদন। রাতে মায়ের ভোগে নিরামিষ আহার। ময়দার লুচি, খিচুড়ি, তরকারি, কয়েক রকমের, ভাজা, রাবড়ি, রসগোল্লা, চাটনি, দই, মিষ্টি, পান সহযোগে ভোগ নিবেদন।

টালিগঞ্জের করুণাময়ী কালী মন্দির। ২৬৫ বছরের পুজো। এই পুজোর বিশেষত্ব হল, কালীপুজোর দিন কুমারী পুজো হয়। এদিন সকালে সকালে মঙ্গলারতি দিয়ে পুজো শুরু হয়। বিকেলে মাকে রাজবেশে সাজানো হয়েছে মা করুণাময়ীকে। রাতে ভোগ নিবেদন করা হবে।

৯৬ বছর পেরিয়ে ৯৭ বসে পা দিল কলকাতার ঐতিহ্যপূর্ণ পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতির পুজো। শোনা যায়, এই কালীই কলকাতার মধ্যে সবথেকে বড় কালী। উচ্চতা প্রায় ৩১ ফুট। প্রতিবারই এই পুজো দেখতে কলকাতার পাশাপাশি অন্যান্য জেলা থেকে নামে মানুষের ঢল। এবার তার অন্যথা হল না। সন্ধ্যা থেকেই মণ্ডপের সামনে নামছে মানুষের ঢল। এখানে কালীর হাতে যে খড়্গ রয়েছে তার দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ ফুটের কাছাকাছি। হাতে যে নর মুণ্ডু ঝোলে তার তার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩ ফুটের কাছাকাছি। দেবীর যে যে সোনা ও রূপোর অলঙ্কার থাকে তা প্রায় ৭৫ কিলোর কাছাকাছি।

আরও পড়ুন- জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে উত্তপ্ত হাওড়ার জগাছা

অসমের গুয়াহাটির কামাখ্যা মন্দিরে প্রতিবারের মতো এবারও মায়ের সাড়ম্বর আরাধনা। নীলাচল পাহাড়ের কোলে ব্রহ্মপুত্রের তীরে এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানা কাহিনী। শ্রেষ্ঠ সতীপীঠ হিসেবে পরিচিত কামাখ্যা। সারা দেশ থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে আসেন। এদিন দেবী মাকে মহাস্নান করিয়ে, ষোড়শপচারে ভোগ নিবেদন করা হয়। এরপর মহা বলিদান। মাছ ভোগ ও বলিদানের মহপ্রসাদ ভোগও নিবেদন করা হয় মাকে। সকালে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের দরজা। এখানে শুধু দর্শন নয়, মাকে স্পর্শ করে পুণ্যলাভ করতে আসেন ভক্তরা। কথিত আছে, এখানে না এলে তন্ত্রসাধনা সম্পূর্ণ হয় না।