ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন চার মাস। তারপরও শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রধানমন্ত্রী পরিচয়ে ভাষণ দেবেন লন্ডনের (London) এক বড় প্রেক্ষাগৃহে। রবিবারই তাঁর দ্বিতীয় জনসভা। দিল্লি থেকে লন্ডনের ইম্প্রেসন ইভেন্টস ভেন্যুতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য পেশ করবেন তিনি। যুক্তরাজ্যের আওয়ামি লিগ (Awami League) শেখ হাসিনাকে প্রধান বক্তা হিসেবে রেখে এই জনসভার আয়োজন করেছে। এর আগে আমেরিকার আওয়ামি লিগ আয়োজিত একটি সভায় ভাষণ দেন হাসিনা। এটাই শেষ নয়, বাংলাদেশের অরাজক অবস্থায় শেখ হাসিনা একের পর এক সভা করবেন। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (USA) দু’টি সমাবেশে ভাষণ দেবেন তিনি। একটি হবে ৯ ডিসেম্বর অর্থাৎ সোমবার। অন্যটি ১৫ ডিসেম্বর।
বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর মহম্মদ ইউনুসের (Mohammed Yunus) নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সেই সরকার রবিবারই চারমাস পার করছে। সেই রবিবারই হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পরিচয়ে ভাষণ দেবেন লন্ডনে। আওয়ামি লিগের পক্ষ থেকে এই সভার আমন্ত্রণপত্র ও পোস্টারে শেখ হাসিনাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা বর্তমান ও দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা ভারতে পা দিয়ে বলেছিলেন, আমি পদত্যাগ করিনি। আমি এখনও সাংবিধানিকভাবে নির্বাচিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। রক্তপাত এড়াতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছি শুধু। এরপর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনও জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের কোনও কপি তাঁর কাছে আসেনি। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর এই চারমাসে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এতটুকু পরিবর্তন হয়নি। বরং আরও খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি। সেখানে লংখ্যালঘু নিপীড়ন চলছে। মন্দির ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়দাসের জামিন আটকাতে আইনজীবীদের মারধর করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামি্ লিগকে দেশের কোথাও কোনও সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ১ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আওয়ামি লিগ আয়োজিত সভায় ভার্চুয়ালি ভাষণ দেন হাসিনা। এরপর ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল হাসিনার ভাষণের প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইউনুস সরকারের আর্জি মেনে। কিন্তু তারপরও পিছপা হচ্ছেন না হাসিনা। তিনি পূর্ব ঘোষণা মতো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বর্ষপূর্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জোড়া সভা করার পরিকল্পনা করেছে। ৯ ও ১৫ ডিসেম্বর সভা দুটি হবে নিউইয়র্কে। সেই সভায় হাজির থাকবেন তাঁর মার্কিন প্রবাসী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁর পরিচয়ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলে উল্লেখ করা হয়েছে পোস্টারে। তার আগে হাসিনা লন্ডনের সভায় ভাষণ দেবেন আজ রবিবার। অবৈধ, অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা জবরদখলকারীদের পদত্যাগ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মিথ্যা মামলায় ধৃতদের মুক্তির দাবিতে ভাষণ দেবেন তিনি।