নিঃসঙ্গ লড়াকুর গল্প বলতে ভালবাসতেন পরিচালক তপন সিনহা (Tapan Sinha)। তিনি সত্যিই বাংলা সিনেমার ‘আপনজন’। যদিও সেভাবে তাঁকে উদযাপিত করতে পারেনি বাংলা ও বাঙালি। কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার এই কিংবদন্তিকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান উজাড় করে দিল ৩০-তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (30th Kolkata International Film Festival)। তাঁকে শতবর্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার পাশাপাশি, তাঁর সঙ্গে যে যে কলাকুশলী, টেকনিশিয়ান কাজ করেছেন প্রত্যেকেই সম্মাননা প্রদান করল KIFF। রবীন্দ্র সদনে এদিন উপস্থিত ছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়, শকুন্তলা বড়ুয়া, অভিনেতা দীপঙ্কর দে, দুলাল লাহিড়ী, দেবিকা মুখোপাধ্যায়, লাবনী সরকার, মুনমুন সেন, সুমন্ত মুখোপাধ্যায়, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় কন্যা বাসবী বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, অর্জুন চক্রবর্তী, সোনালী গুপ্ত, রোমি চৌধুরী, সনৎ মোহান্ত, গৌড় কর্মকার, পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়, রূপচাঁদ কুন্ডু, শমীক হালদার-সহ মোট ২৪ জন শিল্পী।

কথায় আর স্মৃতিতে তপন সিনহার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা আর অনুভবের কথা ভাগ করে নিলেন অতিথিরা। মিতভাষী পরিচালক ঠিক কীভাবে সিনেমার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জুড়ে থাকতেন, গানের শুরু থেকে চিত্রনাট্যের খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করতেন, সেই সব প্রসঙ্গ উঠে এল স্মৃতিচারণায়। ‘আঁধার পেরিয়ে’ ছবি নিয়ে মুহূর্তমালা তুলে ধরলেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। ‘বাঞ্ছারামের বাগান’-এর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন দীপঙ্কর দে। এছাড়াও নস্টালজিক হয়ে পড়েন দুলাল লাহিড়ী, শকুন্তলা বড়ুয়া, সুমন্ত মুখোপাধ্যায়, সোনালী গুপ্ত-সহ বিশিষ্টরা। মুনমুন সেন (Moonmoon Sen), অর্জুন চক্রবর্তীরা অবশ্য প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ না থাকায় একটু ক্ষুণ্ন হন। নিজেদের বক্তব্যে উসকে দেন বাঙালির ‘তপন বিস্মৃতি’র কথা।
পরিচালক-পুত্র ডক্টর অনিন্দ্য সিনহা (Anindya Sinha) জানান তিনিই সারাজীবন ‘তপনের ছেলে’ পরিচয় নিয়েই বাঁচতে চান। এদিন অতিথিদের সম্মাননা জ্ঞাপন করেন নন্দন CEO ও কিফ ডিরেক্টর শর্মিষ্ঠা বন্দোপাধ্যায় ও চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারপার্সন গৌতম ঘোষ। ছিলেন হরনাথ চক্রবর্তী, প্রেমেন্দু বিকাশ চাকীরাও। বুধবারে সিনে উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের আগে দুপুরের রবীন্দ্র সদনে ছড়িয়ে ‘তপন দ্যুতি’, রয়ে গেল ‘হারমোনিয়াম’-এর সিম্ফনি।

