গ্রামে গিয়ে পরিষেবা না দিলে রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের বেতন বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্য দফতরের

যেসব মেডিক্যাল কলেজে তারা পড়ছেন, সেখানকার অধ্যক্ষ- উপাধ্যক্ষরাও শাস্তির মুখে পড়তে পারেন।

চাকরির শর্ত মেনে গ্রামে গিয়ে পরিষেবা দিতে বাধ্য থাকেন সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা।আবার কেউ কেউ সেই কাজেই ফাঁকি দিয়ে গ্রামে গিয়ে পরিষেবা না দিয়ে চুপচাপ কাটিয়ে দেন তিনটি বছর। তবে এবার সেই ফাঁকিবাজিতে রাশ টানল রাজ্য। গ্রামে গিয়ে পরিষেবা না দিলে বেতন বন্ধের নির্দেশ দিল নবান্ন। সম্প্রতি, এমনই এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের অ্যাকাউন্ট অফিসারদের উদ্দেশে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘জেলা, মহকুমা, স্টেট জেনারেল বা গ্রামীণ হাসপাতালে নির্ধারিত সময়ে বন্ড সার্ভিসের চিকিৎসকরা না গেলে তাদের ভাতা বন্ধ করে দিতে হবে।’ অর্থাৎ, বন্ড সার্ভিসের তিন বছর এসআর’রা মাসে ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকা করে যে ভাতা পান, তা বন্ধ হয়ে যাবে।

স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এই নিয়ম আগেই ছিল। কাজে ফাঁকিবাজি রুখতে এবং জনস্বার্থে আরও বেশি কঠোর হতে হল নবান্নকে। এমডি-এমএস পাশের পর স্বাস্থ্যদফতরের অধীনে কর্মরত সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের সংখ্যা ১ হাজার ১০০’র বেশি। তাদের ক্ষেত্রে নয়া আদেশনামা কার্যকর হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে  জানা গিয়েছে, এরপর এসআর’রা বন্ড সার্ভিসের নিয়ম অনুযায়ী জনস্বার্থে গ্রামে না গেলে ভাতা বন্ধ তো হবেই। পাশাপাশি, যেসব মেডিক্যাল কলেজে তারা পড়ছেন, সেখানকার অধ্যক্ষ- উপাধ্যক্ষরাও শাস্তির মুখে পড়তে পারেন।

কারণ, কলেজ জানবে না, অথচ তারা নিয়মকে কাঁচকলা দেখিয়ে বছরের পর বছর সেখানে থেকে যাবেন, এমনটা হওয়া অসম্ভব! এই অর্ডারে স্পষ্ট বলা হয়েছে, নিয়ম মেনে না চলা এসআর’দের অবিলম্বে ‘রিলিজ’ করে দিতে হবে। সেইসঙ্গে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, ২০২৫’এর ১ জানুয়ারি থেকে এই সংক্রান্ত কোনও যুক্তি বা অজুহাতই আর মানা হবে না। বন্ড সার্ভিসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় বছরের ডিউটি নিয়ে সমঝোতা করা যাবে না। জেলায় জেলায় তাদের যেতেই হবে। সেক্ষেত্রে অবশ্য যথারীতি কাউন্সেলিংয়ে বসে নিজেদের স্কোর অনুযায়ী পোস্টিং পাওয়ার সুযোগ মিলবে।

প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগে সরকার নির্দেশিত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না যাওয়া ৩১ জন সিনিয়র রেসিডেন্টকে বছরে ১০ লক্ষ করে মোট ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। কলকাতা, আর জি কর, এন আর এস সহ বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজগুলিতে কার্যত কান্নার রোল পড়ে যায়। দলে দলে এসআর’রা অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের কাছে গিয়ে ক্ষতিপূরণ মকুবের জন্য বারবার অনুরোধ জানান। শেষে অবশ্য সরকার তাঁদের এই ক্ষতিপূরণ মকুব করেছে। তার পরই শক্ত হাতে হাল ধরতে কড়া সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার।