আর জি করের ঘটনায় কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) থেকে সিবিআই (CBI)- তদন্ত চলাকালীন একাধিক মনগড়া কাহিনী গোটা রাজ্যে ঘুরেছে। সেই সব কাহিনীর যে বাস্তব ভিত্তি নেই, স্পষ্ট করে দিল শিয়ালদহ আদালত (Sealdah Court)। সঞ্জয় রাইকে ফাঁসির সাজা না দিলেও কলকাতা পুলিশ তদন্তে যে তথ্যপ্রমাণ তুলে দিয়েছিল তাতেই মান্যতা দেওয়া হল রায়ে। মৃতার পরিবার গণধর্ষণ ও খুনের স্থান নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছিল, তা যে অমূলক, স্পষ্ট করে দিল আদালত।

গণধর্ষণের অভিযোগ তুলে একশ্রেণির রাজনীতি প্রভাবিত চিকিৎসক রাজ্যের মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। তা যে আদতে ভুল দাবি, জানানো হল আদালতের তরফে। বিচারক অনির্বান দাস রায়ে জানান, ‘মাল্টিপল পেনিট্রেশন’ (multiple penetration) বা অনেকে মিলে কোনও বস্তু নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে প্রবেশ করিয়েছে, সেরকম কোনও প্রমাণ মেলেনি। মৃতার দেহে বীর্য বা সিমেনের অস্তিত্ব না পাওয়ায় পুরুষের যৌনাঙ্গ প্রবেশের তত্ত্ব প্রমাণিত হয়নি। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ এর থেকে ও নৃশংস। মৃতার যৌনাঙ্গে ভোঁতা, শক্ত, কোনও শক্ত বস্তু প্রবেশের প্রমাণ মিলেছে। ফলে মৃতার পরিবারের তরফেও যে গণধর্ষণের (gang rape) অভিযোগ তোলা হয়েছিল, তার যে ভিত্তি নেই রায়ে জানিয়েছে বিচারক দাস।

তরুণী চিকিৎসকের পরিবার সাজা ঘোষণার পরেও দাবি জানিয়েছিলেন সেমিনার রুমে তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়নি। রায়ের কপিতে জানানো হয়েছে, মৃতা যে চাদরে শুয়ে ছিলেন তাতে ধস্তাধস্তির চিহ্ন রয়েছে। মৃতা চিকিৎসক ঘুমাচ্ছিলেন। আচমকা তাঁর উপর যে আক্রমণ হয়েছিল তা তিনি প্রতিহত করতে পারেননি। সেমিনার রুমেরই টেবিল থেকে সঞ্জয়ের চুলের নমুনা পাওয়া গিয়েছিল। ফলে সেখানে তার উপস্থিতিও প্রমাণিত। ফলে তথ্য প্রমাণ থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেমিনার রুমই প্লেস অফ অকারেন্স (place of occurance)।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে সঞ্জয় রাইকে ঘৃণ্য অপরাধী বলে মত প্রকাশ করেছেন। কার্যত বিচারক দাসের রায়ে তার পাশবিক প্রবৃত্তিই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, মৃতা চিকিৎসককে তিনি আগে থেকে চিনতেন না। তাঁদের মধ্যে কোনও শত্রুতাও ছিল না। বা কেউ তাঁকে খুনের সুপারিও (supari) দেয়নি। ফলে পাশবিক প্রবৃত্তিতেই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অপরাধী সঞ্জয়, উঠে এসেছে রায়ে।

–

–

–

–

–

–

–
