Tuesday, December 30, 2025

আর জি কর কাণ্ড: অভিভাবকরাও কেন প্ররোচনায় পা দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছেন!

Date:

Share post:

সোমবার সঞ্জয় রাইয়ের সাজা ঘোষণার পরে আরজি করের মৃত পড়ুয়ার অভিভাবক যা বলেছিলেন, মঙ্গলবার একেবারে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন। দাবি, আরজি কর মামলায় তথ্য-প্রমাণ লোপাট করেছেন নাকি মুখ্যমন্ত্রী! অবাক কাণ্ড। দুর্ভাগ্যজনক এবং বিস্ময়কর। কাদের প্ররোচনায় এসব কথা বলছেন? কারা তাঁদের দিয়ে এ-কথা বলাচ্ছেন! তাঁরা শোকাহত আমরা জানি, পূর্ণ সহানুভূতিও আছে। কিন্তু তা বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জড়িয়ে এমন অর্বাচীনের মতো অভিযোগ?

যাঁরা বলছেন, আরজি করে পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় তথ্য-প্রমাণ লোপাট হয়েছে, তাঁরা সত্যের অপলাপ করছেন, জেনেশুনে মিথ্যাচার করছেন। বিচারক ১৮ জানুয়ারি অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইকে দোষী সাব্যস্ত করেন। ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণে বলপ্রয়োগ করে খুন এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন সঞ্জয় রাইকে। যুক্তি বলছে, সঞ্জয় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই। বিচারক অনির্বাণ দাস রায় দিতে গিয়েও এই তিনটি ধারার কথাই উল্লেখ করে বলেছেন, তথ্য প্রমাণ বলছে ধর্ষণ করে খুনের পিছনে রয়েছে একমাত্র সঞ্জয় রাই। যারা মিথ্যাচার করছেন তারা তো বিচারককেই চ্যালেঞ্জ করছেন। এরাই এক সময়ে সিআইডি তদন্তের বদলে সিবিআই চেয়েছিল। এখন আবার অন্য সিবিআই তদন্ত চাই বলে আওয়াজ তুলেছে। বিচার নয়, অস্থিরতা ও বিভ্রান্তি তৈরিই এদের আসল উদ্দেশ্য।

প্রশ্ন উঠেছে যাবজ্জীবন সাজা নিয়ে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রথম ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন। যে তিন ধারায় সঞ্জয় অভিযুক্ত হয়েছে, তাতে সর্বনিম্ন শাস্তি যাবজ্জীবন, এবং সর্বোচ্চ ফাঁসি। এবার বিচারক কোন শাস্তি দেবেন, এটা যেমন বিচারকের এক্তিয়ার, তেমনি সিবিআই কীভাবে কতখানি যুক্তি দিয়ে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছে, সেটাই বিবেচ্য। গুড়াপ, ফরাক্কা, মাটিগাড়া ও কুলতলিতে ধর্ষণ করে খুনের মামলায় পুলিশ ও আইনজীবীদের যুক্তির জোরাল আবেদনে ফাঁসির আদেশ হয়েছে। এখানে সিবিআই কেন পারল না তার বিশ্লেষণ হোক। কিন্তু কুৎসা কেন হবে?

বিচারক অনির্বাণ দাস যাবজ্জীবন বেছে নিয়েছেন। বাংলার মানুষের পছন্দ হয়নি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও এই রায়ে অসন্তুষ্ট। আর সেই কারণেই রাজ্য সরকার হাই কোর্টের ডিভিসন বেঞ্চে গিয়েছে সকলের আগে। অন্যরাও যেতে পারেন। সেটা না করে কেন বিভ্রান্তি ছড়িয়ে নতুন করে তথ্য প্রমাণ লোপাটের গল্প ছাড়তে শুরু করেছেন? ১৬৪ দিন ধরে বারবার মৃতার অভিভাবকরা বয়ান বদল করেছেন। এবার কিন্তু বিষয়টা আর সংবেদনশীলতার পর্যায়ে থাকছে না। সন্তান হারানোর বেদনার জায়গা থেকে ব্যক্তিকে কালিমালিপ্ত করাটা অভিপ্রেত নয়, সৌজন্যও নয়, বিচার পাওয়ার যৌক্তিক পথও নয়।

আরও পড়ুন – রাস্তায় ফেলে মারধরের অপমানে সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী মহিলা! পলাতক বিজেপি কর্মী

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

spot_img

Related articles

বাংলার ভূয়সী প্রশংসায় অর্থনীতিবিদ মৈত্রীশ

পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য যতটা করুণ দেখানো হয় আপেক্ষিক চিত্রটা ততটা খারাপ নয়। রীতিমতো অঙ্ক কষে পরিসংখ্যান দিয়ে জানালেন লন্ডন...

তৃণমূলের দাবিতে সায় কমিশনের! আরও মানবিক হওয়ার আবেদন অভিষেকের

রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (SIR) প্রক্রিয়ার শুনানি ঘিরে তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি মেনে নিল নির্বাচন কমিশন। বয়স্ক,...

বাংলার রেল কাজে ঢিলেমি! কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর

বাংলায় রেল প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ঢিলেমির অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নিউটাউনে এক সরকারি...

দলনেত্রীর নির্দেশে ২৯৪ কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটরের নাম ঘোষণা তৃণমূলের

২৬ ডিসেম্বরের ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন রাজ্যের সবক’টি বিধানসভা কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটরের নাম জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতোই...