রেল হকারদের বঞ্চনার প্রতিবাদে এবং ঠিকা শ্রমিকদের নূন্যতম বেতনের দাবিতে শিয়ালদার ডিআরএম বিল্ডিং অভিযান করল আইএনটিটিইউসি। শুক্রবার তাদের মূল দাবি ছিল রেলের ঠিকা শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন দিতে হবে। উপস্থিত ছিলেন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর কলকাতার জেলা সভাপতি স্বপন সমাদ্দার, নদিয়া দক্ষিণের সভাপতি সনৎ চট্টোপাধ্যায়, বসিরহাট জেলা সভাপতি কৌশিক দত্ত সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রেলের বাজেট তুলে দেওয়া রেল বেসরকারীকরণের প্রথম পদক্ষেপ। রেলের হকারদের(HAWKER) উপর রীতিমতো অত্যাচার করা হচ্ছে। এমন ঘটনা ঘটেছে যে গাড়ি থেকে RPF ফেলে দেওয়ায় সেই হকারের মৃত্যু হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত বলেছে সম কাজে সম বেতন। অথচ রেলের ঠিকা শ্রমিকরা ন্যূনতম বেতন পাচ্ছেন না। প্রয়োজনে গোটা রাজ্যের রেল হকারদের নিয়ে দিল্লিতে অভিযান করতে আমরা বাধ্য হব। তার অভিযোগ, রেল(INDIAN RAIL) বলছে একজন হকারকে ৩৬০০ করে টাকা প্রতি মাসে রেলকে দিতে হবে। শুধুমাত্র হকারি করার জন্য। এটা অত্যাচার নয়। এই টাকা দিলে তবেই এজেন্সি হকারি করার কার্ড দেবে। অথচ একজন হকার কত টাকা রোজগার করেন।

তার সাফ কথা, হকাররা রেল ব্যবস্থা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। হকারদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রকল্প চালু করেছিলেন সেগুলো সব বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আসলে বাংলাকে বঞ্চিত করে বাংলাকে ধ্বংস করা চেষ্টা চলছে। পার্লামেন্টে(PARLIAMENT) হকারদের লাইসেন্স নিয়ে আমরা জিজ্ঞেস করব, কেন্দ্রীয় সরকার কি জবাব দেয় আমরাও দেখব। ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে, যাতে কোনও প্রতিবাদ প্রতিরোধ না হয়। শ্রম কোডের আইন পর্যন্ত বদলে দেওয়া হয়েছে। যেখানে আট ঘণ্টার পরিবর্তে ১২ ঘণ্টা কাজ করলেও কোনও ওভারটাইম পাওয়া যাবে না। রেল প্রায় ৩০০ ওয়ার্কশপ বেসরকারি হাতে দিয়ে দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন শ্রম কোডের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করে বলেছেন, বাংলায় যতক্ষণ তৃণমূল সরকার থাকবে ততক্ষণ আট ঘণ্টা কাজের অধিকার কেউ কাড়তে পারবে না।

তার আরও অভিযোগ, চটের ব্যাগের বদলে পলিব্যাগ ব্যবহার করার কথা বলছে কেন্দ্র। এভাবেই বাংলার চট শিল্পকে ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে। আসলে বিজেপি ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করছে। ধর্মের নামে শ্রমিকদের বিচ্ছিন্ন করতে চাইছে।তাদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে।

স্বপন সামাদ্দার বলেন, রেল বাজেট আলাদা করতে হবে। বাংলার জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন যে প্রকল্পগুলো শুরু হয়েছিল সেগুলোর বাস্তবায়ন করতে হবে। ক্যাজুয়াল কর্মীদের ১২-১৪ ঘণ্টা কাটালেও তাদের সঠিক মজুরি দিচ্ছে না রেল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ঠিকা শ্রমিকদের ন্যূনতম সাত বছর কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ নিজেদের ইচ্ছেমতো তাদেরকে বসিয়ে দিচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।

বিধায়ক সোমনাথ সাহা বলেন, বাংলাকে বঞ্চিত করার জন্য রেল হকার উচ্ছেদ করছে। এটা দ্রুত বন্ধ হওয়া দরকার।এদিন তারা শিয়ালদার ডিআরএমের কাছে এমনই নানান দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপিও জমা দেন। কয়েক হাজার রেল হকার ও ঠিকা শ্রমিক এদিনের কর্মসূচিতে অংশ নেন।

–

–

–

–

–