পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে চিঠি দিলেন দেশের উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdip Dhankar)। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Biman Banerjee) কাছে এই ইচ্ছে প্রকাশ করে সচিব মারফৎ চিঠি পাঠিয়েছেন ধনকড়। তবে, রাজ্য বিধানসভায় উপরাষ্ট্রপতির ভাষণ দেওয়ার নজির বা আইনি সংস্থান নেই বলে বিধানসভার সচিবালয়ের তরফে জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে উপরাষ্ট্রপতির ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে প্রথম দফার বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার পর বিশেষ অধিবেশন ডাকা হতে পারে। তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, বাংলা বিধানসভা যে উচ্চতায় পৌঁছেছে, তা সারা ভারতকে আকর্ষণ করে। অতীতের ব্যবহারের অনুতাপ থেকেই এই ইচ্ছে প্রকাশ বলে মত কুণালের (Kunal Ghosh)।

সূত্রের খবর, বাজেট অধিবেশনের (Budget Session) শুরুতেই ভাষণ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Biman Banerjee) কাছে চিঠি পাঠান বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল ধনকড়। এমনকী, এই আশ্বাস দেওয়া হয় যে উপরাষ্ট্রপতি ভাষণে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোনও শব্দ বা বাক্য বলবেন না। তবে, বিধানসভার সচিবালয় সূত্রের খবর, উপরাষ্ট্রপতি ভাষণের কোনও সংস্থান নেই বলে জানিয়েছেন স্পিকার। উপরাষ্ট্রপতির এই প্রস্তাবিত সফরকে স্বাগত জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, এই ঘটনা অভূতপূর্ব। ইতিপূর্বে দেশের কোনও উপরাষ্ট্রপতি কোনও বিধানসভায় এসে বক্তব্য রাখেননি। তবে বাজেট অধিবেশনে উপরাষ্ট্রপতিকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়ার আইনি সংস্থান নেই। সেক্ষেত্রে ধনকড়ের ইচ্ছেকে মর্যাদা দিতে তাঁকে ভাষণ দেওয়ার সুযোগ করে দিতে বিশেষ অধিবেশন ডাকার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে সেই অধিবেশন কবে হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ১২ ফ্রেবুয়ারি জরুরি ভিত্তিতে বিধানসভার বিজনেস অ্যাডভাইসরি (বিএ) কমিটির বৈঠক ডেকেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। এরপরই, উপরাষ্ট্রপতির দূতকে দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়া হবে বিধানসভার অধ্যক্ষের অফিস থেকে।
সোমবার থেকে বিধানসভার (Assembly) বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। ১২ তারিখই পেশ হবে বাজেট। প্রথম পর্যায়ের অধিবেশন চলবে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ১০ মার্চ, চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত। সেই সময়ে উপরাষ্ট্রপতি ভাষণের ব্যবস্থা করা যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে, এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকাকালীন একাধিক বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে নবান্নের মতান্তর হয়। এমনকী তাঁকে রাজ্য থেকে সরাতে দিল্লিতে চিঠিও লেখা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির নির্দেশে মন্তব্য ও কাজ করার অভিযোগ তোলে রাজ্যের শাসকদল। সব বিষয় নিয়েই রাজ্যে সরকারে সমালোচনায় করেন তৎকালীন রাজ্যপাল ধনকড়।
আরও খবর: বীরভূমের কাঁকড়তলায় বোমাবাজিতে উত্তেজনা, রাজনীতির সম্পর্ক নেই: মত কাজলের

এই বিষয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, বাংলা বিধানসভা যে উচ্চতায় পৌঁছেছে, তা সারা ভারতকে আকর্ষণ করে। এর থেকে প্রমাণ হয়, রাজ্য সরকারে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা সঠিক রাস্তায় আছেন। বাংলার বিধানসভা ততটা উচ্চতা উঠেছে। দেশ-বিদেশের নামী বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে অনেকেই ভাষণ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। রাজ্যের তৃণমূল সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কারণে বিধানসভার মর্যাদা সেই পর্যায়ে উঠেছে। ধনকড়ের অতীতের বিরোধিতার প্রসঙ্গে কুণালের মত, উনি হয়ত এখন পাপের প্রায়শ্চিত করতে চান। তখন বিজেপির কথায় তিনি যা করেছেন, তার জন্য হয়ত অনুতাপ করছেন- সেই কারণেই এই ইচ্ছে প্রকাশ।

–

–

–

–

–

–
