নেতারা কর্মীদের মন বোঝে না: সিপিআইএমের জেলা কমিটি থেকেই বাদ বিদায়ী সম্পাদক!

নতুন জেলা কমিটির (district committee) জন্য নেতৃত্ব ৭৪ জনের নাম প্রস্তাব করলেও তার পাল্টা ২৭ টি নাম জমা পড়ে। এই ২৭ জনকে বোঝাতে রাজ্য নেতৃত্ব একেবারে বারাসাতে

বাম আমলে রাজ্যের মানুষের উপর নিজেদের নীতি থেকে সমস্ত পদক্ষেপ চাপিয়ে দেওয়ার যে অভ্যাস সিপিআইএমের (CPIM) নেতাদের ছিল, ২০২৪-এ এসেও তার এতোটুকু বদল হয়নি প্রমাণ হল জেলা কমিটি তৈরি করতে গিয়েই। উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) সিপিআইএম কর্মীদের অপছন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ানো বিদায়ী জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তীকে আবারও জেলা সম্পাদক (district secretary) করার পরিকল্পনা করে ফেলেছিল রাজ্য কমিটি(state committee)। শেষ পর্যন্ত চাপিয়ে দেওয়া নেতৃত্বকে মেনে না নিতে অনড় কর্মীদের চাপে এবারের জেলা কমিটি থেকেই বাদ পড়ে গেলেন সেই বিদায়ী জেলা সম্পাদক। ভোটাভুটিতে সবথেকে কম ভোট পেলেন তিনি।

রাজ্য কমিটি নির্বাচনের আগে জেলা স্তর থেকে নিজেদেরই কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে সিপিআইএম (CPIM) নেতৃত্ব। নিজেদের বস্তাপচা ধ্যান-ধারণা যেভাবে রাজ্যের মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সিপিআইএম নেতৃত্ব, সেভাবে যে আর চলবে না তা বুঝিয়ে দিল দলেরই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কর্মীরা। রাজ্য নেতৃত্ব, এমনকি পলিটব্যুরো সদস্যদের অনুরোধেও কাজ হল না। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঝুলে রইল এই জেলার জেলা সম্পাদক নির্বাচন।

গত রবিবার সিপিআইএম উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সম্মেলন শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই সময় থেকেই জেলা কমিটিতে কতজন এবং কে কে থাকবেন তা নিয়ে ভিন্ন মত তৈরি হয়। নব্য বামেরা রাজ্য কমিটির (state committee) চাপিয়ে দেওয়া নেতৃত্বকে আর মেনে নিতে চাননি। নতুন জেলা কমিটির (district committee) জন্য নেতৃত্ব ৭৪ জনের নাম প্রস্তাব করলেও তার পাল্টা ২৭ টি নাম জমা পড়ে। এই ২৭ জনকে বোঝাতে রাজ্য নেতৃত্ব একেবারে বারাসাতে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে চলে আসেন। কিন্তু তাতেও ফল হয়নি।

রাজ্য নেতৃত্বের চাপে ২৫ জন নাম প্রত্যাহার করতে রাজি হলেও মধ্যমগ্রামের নেতা সনৎ বিশ্বাস ও নিউটাউনের সৌমেন চক্রবর্তী নাম প্রত্যাহার করেননি। ফলে রবিবার কমিটি তৈরিতে ভোটাভুটি আসন্ন হয়ে দাঁড়ায়। আজ, রবিবার বারাসাতে সেই ভোটাভুটি হলে দেখা যায় প্রস্তাবিত নেতৃত্বদের মধ্যে সবথেকে কম ভোট পেয়েছেন বিদায়ী জেলা সম্পাদক (district secretary) মৃণাল চক্রবর্তী। বিক্ষুব্ধ কর্মী সৌমেন চক্রবর্তী হেরে গেলেও আরেক বিক্ষুব্ধ নেতা সনৎ বিশ্বাস জেলা কমিটিতে (district committee) জায়গা করে নেন।

বুধবার জেলা সম্পাদক নির্বাচনের বৈঠক। উত্তর ২৪ পরগনার রাস হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝতে পেরে এবার সম্পাদক নির্বাচনের আগে আলিমুদ্দিনে ডাকা হয়েছে উত্তর চব্বিশ পরগনার নেতাদের। যদিও সম্পাদক নির্বাচনের পথ যে ভোটাভুটি পার করে সহজ হবে না বুঝে গিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। জেলার নেতারাই বলছেন, যে দলের রাজ্য নেতৃত্ব কর্মীদের কথা বোঝে না, তারা কী করে রাজ্যের মানুষের মনোভাব বুঝবেন।