ট্রিপল ইঞ্জিন সরকারের টিকিট বিক্রির লোভ! দিল্লি পদপিষ্টে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট RPF-এর

ভিড় দেখে নিউদিল্লি (New Delhi) স্টেশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সিকিউরিটি কমিশনার (আরপিএফ) (RPF) স্টেশন ডিরেক্টরকে (station director) নির্দেশ দেন টিকিট বিক্রি বন্ধ করতে

মহাকুম্ভে পুণ্যার্থীদের প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে কতটা ছিনিমিনি খেলা হয়েছে তা উত্তরপ্রদেশের ডবল ইঞ্জিন সরকার প্রমাণ করেছিল। দিল্লির (New Delhi) ট্রিপল ইঞ্জিন (triple engine) সরকার পুণ্যার্থীদের শুধুই মুনাফা লাভের নেশায় মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়েছিল, এবার তা প্রমাণ হয়ে গেল রেল পুলিশের রিপোর্টেই। আরপিএফ-এর (RPF) দাবি প্রয়াগরাজের (Prayagraj) জন্য জেনারেল টিকিট বিক্রি বন্ধ করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেকথা যে মানেনি স্টেশন ডিরেক্টর তা ভিড় ও মৃত্যুতেই প্রমাণিত। বাংলার শাসকদলের তরফ থেকেই প্রথম দাবি করা হয়েছিল, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে টিকিট বিক্রির দায়িত্বে কারা ছিলেন তাঁকে খুঁজে বের করে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আরপিএফের রিপোর্ট কার্যত সেই দাবিকেই শিলমোহর দিলো।

তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সোমবারই দাবি করেছিলেন, জেনারেল বগির টিকিট (ticket) বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার। কোথায় উঠবে। কাদের ব্যর্থতা, কারা টিকিট বিক্রি করছে। তারা জানে না কটা কামরা, কতজন মানুষ উঠতে পারবে। কতজন মানুষকে ধরতে পারে। হাজার হাজার টিকিট বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। মানুষ পাগলের মতো উঠতে যাচ্ছে। নারকীয় ব্যবস্থা। চূড়ান্ত অব্যবস্থা। পরিকাঠামো, নজরদারি, রেলওয়ে ম্যানেজমেন্টের পরিপূর্ণ ব্যর্থতা।

এবার আরপিএফ (RPF) রিপোর্টে প্রকাশ, আটমকাই ১২-১৩, ১৪-১৫ ও ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রবল ভিড় হয়ে যায়। এই ভিড় দেখে নিউদিল্লি (New Delhi) স্টেশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সিকিউরিটি কমিশনার (আরপিএফ) স্টেশন ডিরেক্টরকে (station director) নির্দেশ দেন টিকিট বিক্রি বন্ধ করতে। পরবর্তীতে ভিড় আরও বাড়বে সেই আশঙ্কাই তিনি ডিরেক্টরের কাছে প্রকাশ করেন বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে।

এর আগে দিল্লি পুলিশ রিপোর্টে জানিয়েছিল মহাকুম্ভের (Mahakumbh) যাত্রীদের জন্য প্রয়াগরাজের একটি ট্রেন প্রথমে একটি প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা হওয়ার পরে ফের আরও একটি ট্রেন অন্য একটি প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা হওয়ার পরই হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায় ফুটব্রিজের (footbridge) উপরে। তার জেরেই পদপিষ্টের (stampede) ঘটনা। এবার আরপিএফ-এর (RPF) রিপোর্টেও একই বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, পৌনে নটা নাগাদ ঘোষণা করা হয় প্রয়াগরাজের একটি স্পেশাল ট্রেন ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘোষণা করা হয় ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রয়াগরাজের জন্য ছাড়বে। সেই সময় ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে মগধ এক্সপ্রেস (Magadh Express), ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস (Sampark Kranti Express) দাঁড়িয়েছিল। প্রয়াগরাজের (Prayagraj) যাত্রীরাও ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ছিলেন। ঘোষণা হওয়ার পরই ১২-১৩ ও ১৪-১৫ প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রবল ভিড় ২ ও ৩ নম্বর ফুটব্রিজে উঠে আসে। একদিকে মগধ ও সম্পর্কক্রান্তির যাত্রীরা ফুটব্রিজ দিয়ে নিচে নামার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে প্রয়াগরাজের যাত্রীরা উপরে ওঠার চেষ্টা করেন। ফলে পদপিষ্টের (stampede) পরিস্থিতি তৈরি হয়।

আবার রেলের দাবি, যেহেতু সাধারণত প্রয়াগরাজের (Prayagraj) ট্রেন ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ে তাই বেশিরভাগ যাত্রী সেখানেই ছিলেন। ভিড় বেশি হওয়ার খবর পেয়ে স্টেশন ডিরেক্টর প্ল্যাটফর্ম বদল করার সিদ্ধান্ত নেন। সেটাই ছিল ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম। এরপরেও আবার একটি ট্রেন ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রেল দফতরের অতিরিক্ত কুম্ভের ট্রেনের নীতি অনুযায়ী। এর ফলেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। দিল্লি পুলিশ, আরপিএফ (RPF) ও রেলদফতরের যৌথ রিপোর্ট পেশ করা হবে এই ঘটনার তদন্তে তৈরি হওয়া দুই সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে।