ট্যাংরাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট: আত্মহত্যা নয়, খুন হয়েছেন ২ মহিলা ও নাবালিকা!

আত্মহত্যা নয়, ট্যাংরায় (Tangra) পরিবারের তিন মহিলা সদস্যকে খুনই করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের (Post-mortem) প্রাথমিক রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ট্যাংরা-কাণ্ডে প্রথম থেকে পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা প্রথম থেকেই বলছিলেন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই এই ঘটনার জট অনেকটা খুলবে। হলও তাই। জানা গিয়েছে, দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে। নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে বিষক্রিয়ায়।

বৃহস্পতিবার, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে তিনটে পর্যন্ত তিনজনের দেহের ময়নাতদন্ত হয়। রোমি দে-এর দু হাতের কব্জি কাটা ছিল। গলাতেও বাঁ দিক থেকে ডান দিকে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। তাঁর পাকস্থলীতে কিছু বিষ জাতীয় তরল মিলেছে। সুদেষ্ণা দে-এর দু হাতেরও কব্জি কাটা ছিল। দু হাতের কব্জির প্রধান শিরাগুলি কাটা ছিল। তাঁর গলাতেও গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। প্রবল রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে এই দুজনের। বাড়ির কিশোরী কন্যা প্রিয়ংবদা দে-এর বুকে দু’টি পায়ে, ঠোঁটে আচড় এবং কালশিটের দাগ মিলেছে। বিষক্রিয়ার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রকাশ।  খাওয়ার ৩ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে খুন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত হওয়ার ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ।

ময়নাতদন্তের (Post-mortem) প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে প্রকাশ আত্মহত্যা নয়, ট্যাংরা কাণ্ডে তিনজনকে খুনই করা হয়েছে। সুতরাং প্রথম থেকে একে আত্মহত্যা বলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারের তিন পুরুষ সদস্য।

বুধবার ভোররাতে প্রথমে বাইপাসের অভিষিক্তা মোড়ের কাছে পিলারে ধাক্কা দেয় একটি গাড়ি। সেই দুমড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে প্রণয় দে, প্রসূন দে (Pranay De-Prasun De) ও তাঁদের এক পুত্রসন্তান প্রতীপকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালে তাঁদের ভর্তি করার সময় তাঁরা জানান, বাড়িতে তিনটি মৃতদেহ রয়েছে। সেই মতো ট্যাংরার ১এ, অতুল শূর রোডে গিয়ে হাড় হিম করা দৃশ্য দেখে চমকে যায় পুলিশ। দেখা যায়, দে ভাইদের দুই স্ত্রী সুদেষ্ণা দে এবং রোমি দে-র রক্তাক্ত দেহ দুই ঘরে পড়ে আছে। সেখানে একটিই মাত্র ছুরি মিলেছে। আর এক ঘরে প্রণয় ও রোমির কিশোরী কন্যার দেহ। ১৪ বছরের প্রিয়ম্বদা দের নাক থেকে ফ্লুয়িড বেরিয়ে ছিল। সাধারণত শ্বাসরোধ করে খুন করলে, এই চিহ্ন মেলে। কিন্তু আত্মহত্যায় নাক থেকে ফ্লুয়িড হয় না। বুধবারই, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার (Manoj Verma) জানান, “আরও কিছু জেনেছি। তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই আমরা সব তথ্য প্রকাশ করতে পারছি না। হাসপাতাল থেকে আহতেরা যা বয়ান দিয়েছেন, তা যাচাই করা হচ্ছে।“ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলেন তদন্তকারীরা। এই রিপোর্ট আসতেই আত্মহত্যার দাবি খারিজ হয়ে যায়। এখন চিকিৎসাধীন দে পরিবারের দুই ভাই ও এক নাবালক কী বয়ান দেন সেটাই দেখার।