বিদেশের মঞ্চে বাংলার বদনাম করা শোভনসুন্দর কোন মুখে দেশপ্রিয় পার্কের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন! 

আরজি কর কাণ্ড নিয়ে শুধু রাজ্য রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তোলাই নয়, বিদেশের মাটিতে গিয়েও এই ইস্যুকে নিয়ে বাংলার বদনাম করেছেন বাচিকশিল্পী শোভনসুন্দর বসু (Shobhansundar Basu)। আমেরিকা (America) থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নিজের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে “জাস্টিস ফর আরজিকর”, “উই ওয়ান্ট জাস্টিসে”র স্লোগান তুলেছেন। তারপরেও কোন মুখে শুক্রবার দেশপ্রিয় পার্কে রাজ্য সরকার আয়োজিত ভাষা দিবস-এর অনুষ্ঠানে হাজির হলেন? আর শুধু অনুষ্ঠানে হাজির হাওয়াই নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay) কাছে যাওয়ার কী নির্লজ্জ প্রচেষ্টা। মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাচিকশিল্পী একবারও মনে হল না- এই কলকাতার বিরুদ্ধেই তিনমাস আগে বিদেশে গিয়ে কুৎসা করে এসেছেন আপনি!

৯ অগাস্টের পরে কলকাতাজুড়ে শুধু নয়, বাংলা জুড়ে, দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই নির্মম ঘটনার প্রতিবাদ হয়েছে। সুবিচারের দাবি জানিয়েছেন অনেকেই। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় নেমে দোষীর চরম শাস্তির দাবিতে মিছিল করেছেন। সর্বোচ্চ সাজার দাবি করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু তারপরেও বাম, অতি বাম ও বিজেপির প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদতে একশ্রেণীর মানুষ বাংলাকে বদনাম করতে রাস্তায় নেমেছেন। শুধু কলকাতা বা তার আশপাশের অঞ্চলেই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকী বিদেশেও বাংলার কুৎসা করতে পিছুপা হননি তাঁরা। আর কলকাতা থেকে ঠেঙিয়ে গিয়ে সেই সব মঞ্চ আলো করেছেন এই শোভনসুন্দরের মতো কিছু শিল্পী। আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্ত সিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়, কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ডফোর্ড ও ওহায়োতে বাঙালি ছাত্রছাত্রীদের আয়োজনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আর জি কর নিয়ে শুধু কবিতা বলাই নয়, রীতিমতো সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে স্লোগান দিয়েছেন শোভনসুন্দর বসু। এটা বেশিদিন আগের কথা নয়, মেরে কেটে চার মাস তার মধ্যেই ভোল বদল!

রাজ্য সরকারের আয়োজিত ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত শোভনসুন্দর। সেখানে তিনি একেবারে সাদাকালো পাঞ্জাবিতে সেজে মঞ্চে ঘুরঘুর করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বারবারই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাওয়া বা তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণের সবরকম চেষ্টা করেছেন এই বাচিকশিল্পী। আপনার একবারও মনে হল না শোভনসুন্দর, যে বাংলায় আয়োজিত মনোজ্ঞ ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে নিজে থাকতে পেরে আপনি সম্মানিত বোধ করেছেন, কয়েক মাস আগে সেই রাজ্যের সম্মানকেই বিদেশের মাটিতে আপনি ধূলিসাৎ করেছেন! অভয়ার নির্মম পরিণতিতে সকলে ব্যথিত। সবাই এই পৈশাচিক ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে এবং সবাই দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি চায়। এইখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। কিন্তু এই শোভনসুন্দরের মতো কিছু মানুষ আর জি করকে ইস্যু করে রাজ্যে অরাজকতা তৈরির ষড়যন্ত্র পাকিয়েছিলেন। যে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় বাংলায় ঘটে যাওয়া যেকোনও অপরাধমূলক ঘটনার দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে, সেই পুলিশকে তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে “জুতো মারো তালে তালে” বলে স্লোগান দিয়েছেন। পুলিশ-কন্যাদের নিয়েও কটুক্তি করতে ছাড়েননি এই তথাকথিত প্রতিবাদীরা। নকশাল আমলের স্লোগানের নকল করা স্লোগানে অতিবাম ছাপ স্পষ্ট। আর সেই তালিকায় উজ্জ্বল নাম অদিতি বসু রায়ের। যিনি এই বাচিক শিল্পী শোভনসুন্দরের সহধর্মিনী। এবং সহধর্মিনী ধর্ম মেনে আর জি কর নিয়ে যাবতীয় সরকার বিরোধী আন্দোলনের পোস্ট এবং পোস্টার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন শোভনসুন্দর। তারপর পাঞ্জাবিটি বদলে, পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্য সরকারের আয়োজিত ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে! বাচিক শিল্পীর এ হেন ‘নির্লজ্জতায়’ হতবাক বাংলার মানুষ।