মৃত্যুপুরী মায়ানমারে উদ্ধার ১০০০ নিথর দেহ, আহত তিন হাজারের বেশি!

ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মায়ানমার (Earthquake in Myanmar)। গত ১০ ঘণ্টায় অন্তত চোদ্দবার আফটার শক। আতঙ্কের ঘোর কাটছে না বাসিন্দাদের। উদ্ধার কাজের গতি বাড়াতেই ধ্বংসস্তূপের নীচে থেকে একের পর এক নিথর দেহ বেরিয়ে আসছে। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে, আহত তিন হাজারের বেশি। আগামী কয়েক ঘণ্টায় এই দুই পরিসংখ্যানেই যে বদল আসবে, তা বেশ অনুমান করতে পারছেন বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী এবং উদ্ধারকারী দলের (Rescue Team) সদস্যরা। প্রতিবেশী দেশের দুঃসময়ে ত্রাণ পাঠিয়েছে ভারত। সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া, চিন। ইতিমধ্যেই ব্যাংকক থেকে বাংলায় ফিরেছেন বাঙালি পর্যটকরা।বিমানবন্দরেই শোনালেন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা।

শুক্রবার ভারতীয় সময় পৌনে বারোটা নাগাদ মায়ানমারে প্রথম ভূমিকম্প হয়। সেই কম্পন অনুভূত হয়েছিল উত্তর ভারতসহ পশ্চিমবঙ্গের (WB) বিভিন্ন জেলায়। ব্যাপক প্রভাব পড়ে থাইল্যান্ডে। চোখের সামনে খেলনা বাড়ির মতো ভেঙে পড়ে ব্রিজ, বহুতল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ভয়াবহতার নমুনা দেখেছে নেটপাড়া। শনিবার সেদেশের সরকারি তরফে জানানো হয়েছে ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ১০০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে আছেন বহু মানুষ। ভারতীয় বিমানবাহিনীর (IAF) পণ্যবাহী বিমান সি-১৩০ জে ইতিমধ্যেই ইয়াঙ্গন পৌঁছেছে। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন ব্রহ্মা (Opetation Brambha) । শুকনো খাবার, ওষুধ, তাঁবু, কম্বল, স্লিপিং ব্যাগ, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, জেনারেটরসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ইতিমধ্যেই মায়ানমারে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংককে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরাও বাংলায় ফিরেছেন। মৃত্যুপুরী দর্শন করে কলকাতায় ফিরেছেন থাইল্যান্ড ভ্রমণে যাওয়া রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় (Ranjan Banerjee)। তিনি জানান, ‘ব্যাংককের বর্তমান অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে উঠলেও সেই মুহূর্তে সকলের মধ্যে মৃত্যুভয় ছড়িয়ে পড়েছিল। চোখের সামনে সমস্ত মল, অফিস থেকে লোকজন ছুটে বেরিয়ে আসছিলেন। দ্রুত মেট্রোরেল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি।’ আর এক পর্যটকের কথায়, ‘কয়েক মুহূর্তের জন্য আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে গেছিল গোটা শহর।’

একদিকে যখন মায়ানমারের ভূমিকম্পে একদিনের মধ্যে গোটা দেশ ‘মৃত্যুপুরী’ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন ধ্বংসের মাঝেই সৃষ্টির সুখবর ভাইরাল মিডিয়ায়। কম্পনের তীব্রতায় যখন চারপাশ দিশেহারা, ঠিক তখনই ব্যাংককের রাস্তায় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক তরুণী। শুক্রবার ভূমিকম্পের পর হাসপাতাল থেকে যখন অন্যান্য রোগীদের বাইরে বের করে আনা হয় তখন সেই অন্তঃসত্ত্বার হঠাৎ প্রসব বেদনা শুরু হয়। এরপর রাস্তাতেই জন্ম নিলো শিশু। গোটা ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।