Friday, May 23, 2025

বাংলাদেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি প্রদ্যোৎ মাণিক্যর

Date:

Share post:

কয়েকদিন আগে চিনে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস (Mohammed Yunus)।সেখানে উত্তরপূর্ব ভারত নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এবার সেই মন্তব্যের জবাব দিলেন তিপ্রা মোথা নেতা তথা ত্রিপুরার মহারাজা প্রদ্যোৎ মাণিক্য (Pradyot Manikya)।বাংলাদেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি । উত্তপূর্বের এই নেতার দাবি, ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রামের (Chittagong) পাহাড়ি মানুষজন ভারতের সঙ্গেই থাকতে চেয়েছিলেন। তখন চট্টগ্রাম বন্দর হাতছাড়া করা ভারতের জন্যে ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন প্রদ্যোৎ। এরই সঙ্গে প্রদ্যোৎ মনে করিয়ে দেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর ত্রিপুরা থেকে খুব একটা দূরে নয়। ভারতের স্বাধীনতার সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ অধিবাসী ছিল বৌদ্ধ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের। কিন্তু স্যার সিরিল র্যা ডক্লিফ নেতৃত্বাধীন সীমান্ত কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানের ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণা করে দিয়েছিল। এই আবহে বাংলাদেশের (Bangladesh) মধ্যে দিয়েই ভারতকে ‘রাস্তা করে নেওয়ার’ পরামর্শ দেন প্রদ্যোৎ।

প্রসঙ্গত, চিন সফরে উত্তরপূর্ব ভারতের ৭ রাজ্যকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন ইউনুস (Mohammed Yunus)। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বে ভারতের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। অথচ তাদের সমুদ্রে পৌঁছনোর কোনও উপায় নেই। এই অঞ্চলে আমরাই সমুদ্রের দেখভাল করি। এটি চিনা (China) অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণ হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের আদিবাসীদের সমর্থন করে সমুদ্রে যাওয়ার পথ তৈরি করার সময় এসেছে ভারতের কাছে। একসময় চট্টগ্রাম শাসন করত এই আদিবাসীরাই। ভারতের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল ১৯৪৭ সালে বন্দরটি ছেড়ে দেওয়া। সেখানে বসবাসকারী পাহাড়ি মানুষ ভারতের অংশ হতে চাইতেন। তার হুঁশিয়ারি, ইউনুস মনে করতে পারেন যে তিনি সমুদ্রের অভিভাবক। কিন্তু ভুললে চলবে না, তিনি যে বন্দরের কথা বলছেন তা ত্রিপুরা (Tripura) থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে।

প্রদ্যোৎ বলেন, উদ্ভাবনী এবং চ্যালেঞ্জিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করার পরিবর্তে আমরা বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলতে পারি এবং সমুদ্রে যাওয়ার জন্যে আমাদের নিজস্ব রাস্তা পেতে পারি। পার্বত্য চট্টগ্রামে (Chittagong) সর্বদা আদিবাসী উপজাতিদের বসবাস ছিল। তারা ১৯৪৭ সাল থেকে ভারতের অংশ হতে চেয়েছিল। সেখানে লক্ষ লক্ষ ত্রিপুরী, গারো, খাসি এবং চাকমা জনগোষ্ঠী রয়েছে। তারা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বসবাস করছে। এটি আমাদের জাতীয় স্বার্থ এবং তাদের মঙ্গলের জন্য ব্যবহার করা উচিত।

ত্রিপুরার (Tripura) চাকমাদের দাবি, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করলেও সেখানকার চাকমা এবং জাতিগত অন্যান্য গোষ্ঠী এখনও ভারতকে তাদের ‘কল্পিত মাতৃভূমি’ হিসেবে মনে করে। প্রসঙ্গত, ঐতিহ্যগতভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা, মারমা, তিপেরাস, চাক, মুরং, খুমি, লুশাই, বোম, পাঙ্খ এবং মগসহ কমপক্ষে ১১টি জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বসবাস করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের (Chittagong) আয়তন প্রায় ৫ হাজার ১৩৮ বর্গ কিলোমিটার। যার উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে মিয়ানমারের আরাকান পর্বত, পূর্বে মিজোরামের লুশাই ও মায়ানমারের আরাকান পর্বত এবং পশ্চিমে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার অবস্থান।

spot_img

Related articles

বাংলার কনিষ্ঠ অঙ্গদাতা হয়ে ইতিহাস গড়ল ১২ বছরের উমাঙ্গ! 

'জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর'—এই প্রবাদকে সত্যি প্রমাণ করল কলকাতার এক ১২ বছরের কিশোর,...

চিপস চুরির অপবাদ! অপমানে আত্মঘাতী ছাত্র, উত্তাল পাঁশকুড়া

চিপস চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হল পাঁশকুড়ার এক সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়...

নির্বাচন ঘিরে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেবাশিসের নেতৃত্বাধীন শাসক গোষ্ঠীর

বেশ কয়েকদিন আগেই ইস্তেহার প্রকাশ করেছিল মোহনবাগানে(Mohunbagan) এই মুহূর্তে বিরোধি গোষ্ঠী। সৃঞ্জয় বোসরা(Srinjoy Bose) সেখানে নানান প্রতিশ্রুতির কথা...

অনুমতি ছাড়া কর আদায় নয়! কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর, জারি নির্দেশিকাও 

ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় কোনও রকম সরকারি অনুমতি ছাড়া কর আদায় বন্ধ করতে কড়া নির্দেশ জারি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা...