চাকরি হারিয়েও দায়িত্বে অবিচল হেডস্যার। সুপ্রিম-নির্দেশ তোয়াক্কা না করেই শুধু কর্তব্যের খাতিরে স্কুলে হাজির হলেন তিনি। ভারাক্রান্ত হৃদয়, কিন্তু মাথার উপর যে স্কুলের গুরুদায়িত্ব। তা কি আইনের অনুশাসন মানে! সেই কারণেই সুপ্রিম নির্দেশ সত্ত্বেও স্কুলে এসে হেডস্যার জানিয়ে দিলেন, আমার তো একটা দায়িত্ব আছে। সেই দায়িত্ব পালনের জন্যই স্কুলে এসেছি।

সুতির বহুতালি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জিয়াউলবাবু। চাকরি হারানো শিক্ষকদের তালিকায় নাম রয়েছে তাঁর। যখন বিদ্যালয় চালনা নিয়ে চাপান উতোর তৈরি হয়েছে, চাকরিহারা শিক্ষকরা স্কুলে আসবেন কি না তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধন্দ, তখন কোনও কিছু না ভেবেই সটান হাজির হেড স্যার। এই স্কুলেই চাকরি গিয়েছে আরও ১০ জনের। চারজন পার্শ্ব শিক্ষকসহ মোট ১৯ জন শিক্ষক। তার মধ্যে মোট ১১ জনের চাকরি চলে গিয়েছে। স্কুল চালানো নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকরাও দুশ্চিন্তায়। এই অবস্থায় স্কুল চলবে কী করে? কীভাবে হবে ছাত্রছাত্রীদের পঠন-পাঠন? এই অবস্থায় স্কুলে চলে এসেছেন জিয়াউলবাবু। তাঁর কথায়, মন ভারাক্রান্ত, তবু তিনি এসেছেন। স্কুলে পরীক্ষা চলছে। তাই যাতে অচলাবস্থা তৈরি না হয়, তিনি স্কুলে এসেছেন। দায়িত্ব পালন করেছেন হেড স্যারের।

২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। কোচবিহারে থেকে মিউচুয়াল ট্রান্সফার নিয়ে সুতিতে আসা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর ২৫ হাজার ৭৫২ জনের চাকরি চলে গিয়েছে। সেই তালিকায় এই স্কুলের ১১ জন শিক্ষক রয়েছেন। স্কুলে অবশিষ্ট রয়েছেন স্থায়ী শিক্ষক ৪ জন, প্যারা টিচার ৪ জন, মোট ৮ জন। এই অবস্থায় কী করে বাড়িতে বসে থাকেন হেড স্যার! ২ তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এদিনও স্কুলে পরীক্ষা হচ্ছে। যেহেতু তাঁর দায়িত্ব আছে, দায়িত্ববোধ রয়েছে, তুমি বাড়িতে বসে থাকতে পারেননি। তারপর ডিপার্টমেন্টাল নোটিশও এখনও পাননি। স্কুলের দায়িত্বভার কাউকে বুঝি না দিয়ে তিনি যান কী করে! হিসাব নিকেশের বিষয় রয়েছে। পরীক্ষাটাও চালাতে হবে। বাকি ১০ জন অবশ্য আসেনি স্কুলে।

–



–


–

–

–

–
–

–

–
–