উস্কানি উপেক্ষা, মুর্শিদাবাদের ঘরে ফেরাদের সব দায়িত্ব রাজ্য প্রশাসনের

নতুন বাড়ি পাবেন স্থানীয়রা। তবে বেতবোনার বেশ কিছু পরিবারের ঘর পুড়ে যাওয়ায় প্রশাসনকে তাঁদের সব দায়িত্ব নিতে হয়েছে। প্রায় ৮০টি পরিবার ইতিমধ্যেই ঘরে ফেরে

বিজেপির পরিকল্পিত ভেদাভেদের রাজনীতির চেষ্টাকে উড়িয়ে দিলেন মুর্শিদাবাদের মানুষ। সামশেরগঞ্জে যে উস্কানিতেই অশান্তির আগুন ছড়িয়েছিল তা নিয়ে এখন স্থানীয়দের মধ্যেও কোনও সন্দেহ নেই। তবে রাজ্য প্রশাসনের উদ্যোগ ও সচেতনতায় যে এই ধরনের হিংসার ঘটনা আর সম্ভব নয়, তা নিয়ে আশ্বস্ত সামশেরগঞ্জের (Samsherganj) বেতবোনার ঘরছাড়া মানুষজন। মালদহের পারলালপুর হাইস্কুলের অস্থায়ী শিবির থেকে ঘরে ফিরলেন সব ঘরছাড়া বাসিন্দা। রবিবার সন্ধ্যাতেই সাংসদ শামিরুল ইসলামের (Samirul Islam) উদ্যোগে ঘরে ফেরেন তাঁরা। রাজ্য প্রশাসনের তরফে বিপর্যস্ত এলাকায় তাঁদের খাওয়া, থাকার সব ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে বলে জানান সাংসদ।

এক শ্রেণির হিংসা সমর্থকদের উস্কানিতে সামশেরগঞ্জের বেতবোনা গ্রাম সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানকার প্রায় ৮০টি পরিবার মালদহের পারলালপুরে স্কুলে আশ্রয় নেয়। তবে হামলার পরে এলাকা শান্ত করতে যখন পুলিশ তৎপর হয়, তখনই বেতবোনার বাসিন্দাদের উস্কানি দিয়ে মালদহে পালিয়ে যেতে কাজ করে এক শ্রেণির বিভেদকামীরা। তবে প্রশাসনের উদ্যোগে তাঁরা নিশ্চিন্তে ঘরে ফেরার নির্ভরতা পান। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব, রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামের নেতৃত্বে এলাকায় শান্তি বৈঠক করে মানুষের ঘরে ফেরার পথ প্রশস্ত করেন। সব সম্প্রদায়ের মানুষকে নিয়ে এলাকায় শান্তি মিছিলেরও আয়োজন করা হয়েছিল।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) আগেই জানিয়েছিলেন যাঁদের নষ্ট হয়ে যায় তাঁদের বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই মতো নতুন বাড়ি পাবেন স্থানীয়রা। তবে বেতবোনার বেশ কিছু পরিবারের ঘর পুড়ে যাওয়ায় প্রশাসনকে তাঁদের সব দায়িত্ব নিতে হয়েছে। প্রায় ৮০টি পরিবার ইতিমধ্যেই ঘরে ফেরে। আর তাতেই খালি হয় পারলালপুর হাইস্কুল। যে সব পরিবারের বাড়িতে থাকার পরিস্থিতি রয়েছে, তাঁদের রান্নার জন্য বাসন থেকে খাদ্য সামগ্রী, ত্রিপলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। যে পরিবারগুলির বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ তাঁদের স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। গ্রামের মানুষের জন্য কমিউনিটি কিচেনের ব্যবস্থা করে প্রাথমিকভাবে সাহায্যও করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে যাতে তাঁরা আবার উস্কানিতে পা না দেন, তার বার্তাও দেওয়া হচ্ছে শাসকদলের তরফে। সাংসদ সামিরুল ইসলাম জানান, যাঁরা বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়ে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থেকে মালদহে চলে গিয়েছিলেন, তাঁরা প্রশাসনের উপর আস্থা রেখেই ফিরে এসেছেন। প্রশাসন তাঁদের পাশে সব সময় রয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদরাও এলাকায় সুস্থভাবে জীবনযাপনের পরিবেশ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। সেই প্রতিশ্রুতিতে নির্ভর করেই ঘরে ফিরেছেন ঘরছাড়া প্রায় ৩৮০ জন।