একের পর এক নারী গঠিত কেলেঙ্কারিতে মুখ পুড়ছিল সিপিএমের। একেই ভোট বাক্স শূন্য। তার ওপর যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ। মুখ বাঁচাতে দীর্ঘদিনের সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী ও প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীকে (Bansa Gopal Chowdhury) বহিষ্কার করল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। আগেই কথা ওঠে যদি একই ধরনের অভিযোগে সুশান্ত ঘোষ, তন্ময় ভট্টাচার্যের উপর শাস্তির খাঁড়া নেমে আসে তাহলে, বংশগোপালকে রেয়াত কেন! যেখানে অভিযোগকারী খোদ সিপিএমেরই জেলার নেত্রী। রবিবার সিপিআইএমের মুখপত্র ‘গণশক্তি’তে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল বারবার সংশোধনের চেষ্টা করার পরেও সংশোধিত না হওয়ায় গুরুতর অবক্ষয়ের কারণে রাজ্য কমিটির আইসিসির সুপারিশক্রমে বংশগোপাল চৌধুরীকে বহিষ্কার করা হল।

সমাজমাধ্যমে দলেরই এক নেত্রীর সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমানের বর্ষীয়ান সিপিএম নেতার ‘অশ্লীল’ চ্যাট প্রকাশ্যে আসে (চ্যাটের সত্যতা যাচাই করেনি বিশ্ববাংলা সংবাদ)। এই বিষয়টি নিয়ে সরাসরি সিপিআইএমে-র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের দ্বারস্থ হয়েছিলেন জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ মিউনিসিপ্যালিটির প্রাক্তন কাউন্সিলর রত্না দাস। তাঁর ভরসা ছিল দলের উপর। যদিও বংশগোপালের দাবি ছিল, এটা তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক ষড়যন্ত্র হয়েছে। দলের মধ্যে থেকেই বিরুদ্ধাচারণ হয়েছে। তিনিও বিষয়টি সেলিমকে জানিয়েছিলেন। দলের রাজ্য সম্পাদকের পরামর্শ মতোই চলছিলেন তিনি।

মঙ্গলবার, বিশ্ববাংলা সংবাদের কাছে বংশগোপাল চৌধুরী দাবি করেন, এই রত্না দাস নামের মহিলাকে তিনি চেনেনই না। কোনও কথাও হয়নি কোনওদিন। তাহলে, সব কথা খোলসা করে বলছেন না কেন? সাংবাদিক বৈঠকই বা কেন করছেন না? অভিযোগ দায়ের করেলেন না কেন? এসবের উত্তরে প্রাক্তন সাংসদের একটাই কথা, তিনি মহম্মদ সেলিমের পরামর্শে চলেছেন। দিন কয়েকের মধ্যেই সাংবাদিক বৈঠক করে সব প্রকাশ করবেন। বংশগোপালের আরও দাবি, তিনি না কি এই রত্না দাসকে চেনেন না।

সত্যিই কি তাঁকে চেনেন না বংশগোপাল? বিশ্ববাংলা সংবাদ- এই প্রশ্ন করলে রত্না জানান, হ্যাঁ ঠিক। তাঁর সঙ্গে বংশগোপালের সরাসরি কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁর ফেসবুক পোস্ট দেখে ফেসবুক মেসেঞ্জারে স্তুতি করতেন বংশগোপাল। জেলা নেত্রী তাতে আপ্লুত হয়ে পড়েন। এর পরেই শুরু হয় মেসেঞ্জারে অশ্লীল মেসেজ-অভিযোগ রত্নার। এটা কি সত্যিই চেনা সিপিএম নেতা? রত্না বলেন, সেটা পরখ করতেই না কি হোয়াটস আপ নম্বর চান তিনি। এরপরই অশ্লীল মেসেজের বন্যা। আর সেটা সদ্য নয়, সূত্রপাত নভেম্বরে। তখনই দলকে জানান রত্না। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। রাজ্য সম্পাদকের সঙ্গে যোগযোগ করেন সিপিএম নেত্রী। সেলিম তাঁকে বলেন, তিনি ব্যবস্থা নেবেন।দলীয় নেত্রীকে দেওয়া কথা রাখলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। বহিষ্কার করা হল বংশগোপাল চৌধুরীকে। যদিও এই বিজ্ঞপ্তি জারির পরে বংশগোপাল চৌধুরী এবং রত্না দাস কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

–

–

–

–

–

–

–

–

–
