Monday, November 10, 2025

একাকীত্বের কারণে মনমরা ছিলেন প্রীতম! জানালেন পুত্রহারা রিঙ্কু

Date:

Share post:

একা থাকতে কষ্ট হচ্ছিল। যত্ন হচ্ছিল না ঠিক মতো। নিজের কাছে ছেলেকে নিয়ে আসতে চাইছিলেন। পুত্র সৃঞ্জয় দাশগুপ্ত  (Srinjay Dasgupta) ওরফে প্রীতমের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে জানালেন রিঙ্কু মজুমদার। বিজেপি (BJP) নেতা দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) বিয়ে করার পরে ছেলের থেকে আলাদা থাকতেন রিঙ্কু। সেই ঘটনা ছেলের মনে প্রভাব ফেলেছিল বলে মনে করছেন তিনি।

কী অবস্থায় পুত্রকে দেখেন রিঙ্কু?
মঙ্গলবার, সকালে দিলীপের বাড়িতে ছিলেন রিঙ্কু মজুমদার (Rinku Majumder)। তখনই খবর পান ছেলের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। দ্রুত নিজেই গাড়ি চালিয়ে সাপুরজির আবাসনে যান। সেখানে দেখেন ছেল খাটে শুয়ে। দেখে মনে হচ্ছে গভীর ঘুমে রয়েছেন। প্রতিবেশী গায়ে তেল মালিশ করছিলেন। অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই গাড়ি চালিয়ে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে যান দিলীপ-ঘরণী। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

রিঙ্কু জানান বেশি কিছুদিন ধরেই মনমরা ছিলেন প্রীতম। ঠিক করে খাওয়াদাওযা করছিলেন না। রিঙ্কু বলেন, “দু’-তিন দিন আমারও ঘুম হয়নি। কেন জানি না। মনে হচ্ছিল, ছেলেটা ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া করছে না। টেনশনে ছিলাম। আমি এখানে রান্না করছি, আর ওখানে রান্নার লোক এসে ঘুরে যেত। কখন বন্ধুর বাড়ি থাকত।”

রিঙ্কু বিয়ের পর দিলীপের বাড়ি চলে যাওয়াতেই কি মনমরা প্রীতম?  
জবাবে রিঙ্কু (Rinku Majumder) জানান, “মন খারাপ হয়ে যাচ্ছিল ওর। আমাকে বুঝতে দিত না। কিন্তু আমি বুঝতে পারছিলাম। রান্নার লোক এসে বেল বাজিয়ে ফিরে যাচ্ছিল। রান্না হচ্ছিল না। ঘুম থেকে উঠে অফিস দৌড়ত। বলত, ‘কিছু খেয়ে নেব। এটা খেয়েছি, সেটা খেয়েছি’। আমি বুঝতে পারছিলাম, খাওয়াদাওয়া ঠিক হচ্ছে না।”

ছেলের অসুস্থতার কথাও জানান মা রিঙ্কু
আর জি কর মর্গের সামনে গাড়িতে বসে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, “দেড় বছর আগে একবার জ্ঞান হারিয়েছিল। নিউরোর ওষুধ খাওয়াতাম আমি। কিছুদিন ধরে ঠিকঠাক ওষুধ খাচ্ছিল না। মুখে বলত না, কিন্তু স্বপ্ন ছিল আমার সঙ্গে থাকবে। আমি বললাম, দাঁড়া শীঘ্রই নিয়ে আসব। বলল আগে তো ঘর বানাবে! আমি বললাম, আগে তুই আসবি, তার পর ঘর বানাব। ঘর পরে হবে, আগে তুই থাকতে শুরু করে দিবি। আনন্দে ছিল যে একসঙ্গে থাকব।”
আরও খবর: দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের পুত্র প্রীতমের রহস্যমৃত্যু!

কে কে ছিলেন প্রীতমের সঙ্গে?
রিঙ্কু জানান “রাতে ওর দুই অফিস কলিগ ছিল ফ্ল্যাটে। একজন রাত ১০টা নাগাদ এসেছিল, অন্য জন ৩টে নাগাদ। কাল রাত ১২-১২.৩০টা নাগাদ শেষ বার ফোন করেছিল আমাকে। বলল, সকাল ৮টা নাগাদ সায়েন্স সিটি যাবে। দুর্গাপুর যাবে মামার সঙ্গে। বলল পরিতোষ মামাকে বলে দিও। আমি বললাম, ‘তুই ফোন করে বলে দে’!” রিঙ্কুর সঙ্গে শেষ দেখা হয় মাদার্স ডে-তে। সেদিন রিঙ্কুর বাড়ি এসেছিলেন প্রীতম।

মর্গের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন পুত্রহারা রিঙ্কু মজুমদার। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের পরে দেহ নিমতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্যুর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

spot_img

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...