বিদ্যুতের বিপুল চাহিদা(Electric Demand) বৃদ্ধির দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসকে সামনে রেখে রাজ্য সরকার(State Govt) নতুন শক্তি নীতি তৈরি করতে চলেছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ(Electricity) ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রূপরেখা স্থির করতে বিদ্যুৎ দফতরের অধীনে একটি কৌশলগত পরিকল্পনা ইউনিট গঠন করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই ইউনিট আগামী পাঁচ বছরে রাজ্যের বিদ্যুৎ খাতে গৃহীত প্রকল্পগুলির মূল্যায়ন ও পর্যালোচনার কাজও করবে। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ সিইএ, ২০৩১-৩২ অর্থ বছরে রাজ্যে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ২০ হাজার ৭৭০ মেগাওয়াট এবং ২০৩৪-৩৫ সালের মধ্যে তা আরও বেড়ে ২৪ হাজার ৭৫৭ মেগাওয়াট হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।

এই পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দশকে রাজ্যে উৎপাদন ক্ষমতা বিস্তারের পাশাপাশি পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রেও বিপুল প্রসার প্রায়োজন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। এই চাহিদা মেটাতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ(Coal Electricity) উৎপাদন ক্ষমতা বর্তমান সময়ের ৮ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট থেকে বাড়িয়ে ২০৩৪-৩৫ সালের মধ্যে ১৪ হাজার ১৪৮ মেগাওয়াট করা হবে। আগামী দশ বছরে ৫ হাজার ৯০৪ মেগাওয়াট অতিরিক্ত ক্ষমতা যোগ করতে হবে।

এই ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চারটি নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় ১,৬০০ মেগাওয়াটের গ্রিনফিল্ড প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এবং বাকি প্রকল্পগুলি বর্তমানে পরিকল্পনার পর্যায়ে রয়েছে। এই সমস্ত প্রকল্প রাজ্যের সর্বোচ্চ চাহিদার সময় বিদ্যুতের যোগান নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য গঠিত হতে চলেছে বিদ্যুৎ দফতরের কৌশলগত পরিকল্পনা ইউনিট। যা নীতি, ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করবে। শুধু তাই নয় গত পাঁচ বছরে রাজ্যের বিদ্যুৎ খাতে গৃহীত প্রকল্পগুলির মূল্যায়ন ও পর্যালোচনার কাজও করবে।

পাশাপাশি, রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সহ অন্যান্য সংস্থাগুলির বিদ্যুৎ কেনার স্বল্প-মেয়াদি, মধ্য-মেয়াদি ও দীর্ঘ-মেয়াদি প্রভাব বিশ্লেষণও করবে এই ইউনিট। এসব চুক্তির আওতায় কেন্দ্রীয় উৎপাদন কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে ও বাইরে থাকা স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদকদের সঙ্গে যুক্ত দিকগুলি খতিয়ে দেখা হবে। এই নীতির অংশ হিসেবে তৈরি হবে একটি শক্তি নিরাপত্তা কৌশল, যা রাজ্যের বিদ্যুৎ চাহিদা-সরবরাহ মূল্যায়ন, বিদ্যুৎ সংগ্রহ পরিকল্পনা, বিনিয়োগের সুযোগ ও কম খরচে অপ্টিমাইজড বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা–র ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। একই সঙ্গে, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় নির্দেশিকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলায় ‘কার্বন মার্কেট’ গঠনের জন্য একটি কৌশলগত নীতি তৈরি করতে চায়। সরকারি অনুদানের বোঝা না বাড়িয়ে কীভাবে সরকারি বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে আগামীর জন্য প্রস্তুত করা যায় তাই এই নীতির মূল লক্ষ্য বলে বিদ্যুৎ কর্তাদের দাবি।
–

–

–

–

–


–

–

–

–

–