ওয়াকফ আইন সংশোধন করে বিরোধী থেকে দেশের বিভিন্ন অংশের মানুষের প্রতিরোধের মুখে কেন্দ্রের স্বৈরাচারী সরকার। লাগাতার নিজেদের দাবি যৌথ সংসদীয় কমিটির মুখ দিয়ে চাপিয়ে দেওয়ার যে রাজনীতি করে এসেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, তার মুখোশ খোলা শুরু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। চাপের মুখে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল স্পষ্ট করে দিলেন ওয়াকফ সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশনের (registration) ক্ষেত্রে পুরোনো ওয়াকফ নির্ধারিত সম্পত্তি (WAQF property) নতুনভাবে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। এই প্রসঙ্গেই ওয়াকফ-বাই-ইউজার সম্পত্তিতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার দাবি, ওয়াকফ ইসলামের ধারণার বাইরে। বুধবারও এই মামলায় কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। বৃহস্পতিবার ফের শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

কেন্দ্রের ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় বিরোধী পক্ষের আইনজীবীরা যে দাবি তোলেন তার প্রধান অংশ ছিল কয়েকশো বছরের পুরোনো ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির কোনও রেজিস্ট্রেশন নেই। সেক্ষেত্রে সেগুলি পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের হাতে তুলে দিয়ে ওয়াকফ সম্পত্তিকে কেন্দ্রের সরাসরি অন্তর্গত করার পরিকল্পনা চলছে। সেই দাবির পাল্টা বুধবার আইনজীবী তুষার মেহতা ব্যাখ্যা দেন, ওয়াকফ সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আইনের মধ্য়ে নেই। সরকারি জমিতে যে ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি (WAQF property) রয়েছে, তা সরকার দাবি করতে চাইলে আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে।

সেই সঙ্গে মেহতা স্পষ্ট করে দেন, প্রাচীন ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন এমনটা নয়। যাদের রেজিস্ট্রেশন করানো নেই, তারা এখন রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নিতে পারে। যদিও আগে বিরোধী পক্ষের দাবি ছিল, রেজিস্ট্রেশনের পথে গিয়ে এভাবেই ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির উপর কেন্দ্রীয় ক্ষমতা কায়েম করতে চায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।

সেখানেই সলিসিটর জেনারেল ব্যাখ্যা করেন, ওয়াকফ সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার কোনও উদ্দেশ্য আইনে নেই। তবে ওয়াকফ-বাই-ইউজারের ক্ষেত্রে সম্ভবত আইনি অনুমোদন নেই, কিছু বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া। এই অনুমোদন না থাকার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আইনজীবী তুষার মেহতা দাবি করেন, ওয়াকফ সম্পত্তি ইসলামের একটি ধারণামাত্র। এটি ইসলামের অত্যাবশ্যকীয় অংশ নয়। উদাহরণ হিসাবে বহু ইসলাম রাষ্ট্রে ওয়াকফের ব্যবহার না থাকার দাবি করেন তিনি। সেখানে ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালনার কথা বলেন তিনি। ফলে ধর্মের অত্যাবশ্যকীয় অংশ নয় ওয়াকফ (WAQF), দাবি কেন্দ্রের আইনজীবীর।

বুধবার মূলত কেন্দ্রের আইনজীবীর ব্যাখ্যা শোনেন প্রধান বিচারপতি বি আর গভাই (CJI B R Gavai) ও বিচারপতি অগাস্টিন মাসির বেঞ্চ। ফের বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি রয়েছে। সেখানে মামলাকারীদের বক্তব্য এক ঘণ্টা ও সরকার পক্ষের বক্তব্য আধ ঘণ্টা শোনার কথা বলা হয়। তবে আরও একটি গোটা দিন এই মামলার শুনানি হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

–
–

–
–

–

–

–

–

–
