পাকিস্তানের পাশে থাকার অর্থ জঙ্গি সংগঠনকে সমর্থন করা। সোমবার, দক্ষিণ কোরিয়ার সিওলে (Seoul) উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তোপ দাগলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)। পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ আর পহেলগাম হামলার কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে সর্বদলীয় সংসদীয় প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে জাপানের (Japan) পরে দক্ষিণ কোরিয়া গিয়েছেন অভিষেক। সেখানে অভিষেক স্পষ্ট জানান, ভারতের নম্রতাকে দুর্বলতা ভাবলে, তা ভুল হবে। সন্ত্রাসবাদে পাক মদতের কথা উদাহরণ দিয়ে বোঝান তিনি।

জাপান হয়ে সিওল পৌঁছেছে ভারতের সর্বদলীয় সাংসদের প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রের উদ্যোগেই বিশ্বের নানা দেশে অপারেশন সিন্দুরের প্রয়োজনীয়তা ও পাকিস্তানের (Pakistan) সন্ত্রাসবাদের মদতের কথা জানাচ্ছে তারা। এদিন সিওলে পহেলগাম (Pahalgam) হামলার দুসপ্তাহ পরে পিওকে এবং পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার বিষয় প্রতিনিধি দলের সদস্য অভিষেক বলেন, পহেলগাম জঙ্গি হানার পরে আমরা পাকিস্তানের তরফে ন্যায়বিচারের আশায় দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করেছি। কিন্তু পাকিস্তানের তরফে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলেই, ভারতের তরফ থেকে শুধুমাত্র জঙ্গি ঘাঁটি ধুলিস্যাৎ করা হয়েছে। একজনও সাধারণ নাগরিকের কোনও ক্ষতি হয়নি।

এর পরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। অভিষেকের কথায়, “ভারতের প্রত্যাঘাতে নিহত জঙ্গিদের শেষকৃত্যে যাদের দেখা গেল, তারা কেউ সামান্য পাক জওয়ান নন, সেনা প্রধান ও সেনার নানা বিভাগের কর্তা। পাকিস্তান যে সন্ত্রাসে সরাসরি মদত জোগায়, এই ঘটনার পর তা কার্যত স্পষ্ট।“ তিনি বলেন, “পহেলগাঁও হামলার ২৪ ঘণ্টা পর TRF হামলার দায় স্বীকার করে। এই TRF কারা? এরা হল লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন। আর সেই লস্কর-জইশদের যখন ভারত মারল, তখন ওদেরই শেষ কৃত্যে গিয়ে হাজির হল পাক সেনাকর্তা ও প্রধানরা।“
আর খবর: কোরিয়ায় আজও রবীন্দ্র-পাঠ্য ‘প্রাচ্যের বাতি’: সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন স্মরণ করালেন অভিষেক

অভিষেক স্পষ্ট জানান, পাকিস্তানকে যে কোনও রকম সমর্থনের অর্থ জঙ্গি সংগঠনকে সমর্থন করা। অভিষেক বলেন, “আমাদের প্রত্যেককেই সংগঠিত ভাবে লড়াই করতে হবে। বিশ্ব থেকে সন্ত্রাসকে দূর করতে হবে। আমরা কোনও রকমের যুদ্ধ চাই না। অশান্তি চাই না। কিন্তু আমাদের নম্রতাকেও দুর্বলতা ভেবে ভুল করবেন না।“ ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে অভিষেক বলেন, “প্রথম দিন থেকেই আমাদের অবস্থান স্পষ্ট – তুমি গুলি চালালে, আমরা গুলি চালাই! তুমি থামালে, আমরা থামি। তুমি একতরফা ক্রিয়া বা প্রতিক্রিয়া আশা করতে পার না। নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী, প্রতিটি ক্রিয়ারই সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।“

এর পরেই তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, “আপনার বাড়ির উঠোনে সাপ পুষে রেখে আশা করবেন, সেটি কেবল আপনার প্রতিবেশীকেই কামড়াবে। কিন্তু একবার সেই সাপটি ছেড়ে দিলে, এটি যাকে ইচ্ছে কামড়াবে। একটি সাপ সাপই থেকে যায়। তাই আমাদের খুব সতর্ক এবং সচেতন থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে পাকিস্তান কীভাবে ৯/১১, ২৬/১১ থেকে শুরু করে উরি, পহেলগাম- একের পর এক জঙ্গি হামলা, সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। ওসামা বিন লাদেনকেও পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে পাওয়া গিয়েছিল।“

ভারতের বর্তমান উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে অভিষেক বলেন, “ভারত ও পাকিস্তানের অর্থনীতির গতিপথের দিকে তাকালে দেখা যাবে যে, তাদের মধ্যে নরক-স্বর্গের পার্থক্য রয়েছে। পাকিস্তান যখন নিজেদের অর্থনৈতিক সংকটের সাথে লড়াই করছে, তখন ভারত লাফিয়ে লাফিয়ে উন্নতি করেছে।“ পহেলগামে হামলাটি প্রমাণ করে যে তারা ভারতীয় অর্থনীতির উন্নতি চায় না। এই বার্তাটি আমরা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে চাই কারণ আমাদের বেশ কয়েকটি প্রতিনিধি দল বিভিন্ন দেশে সফর করছে।

–

–

–

–

–
–
–
–
–