সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চাকরির নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে রাজ্য সরকারকে। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালতে রায়ের রিভিউ পিটিশনও করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি বিকল্পই কাজে লাগানোর সুপরামর্শন দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

মঙ্গলবার, নবান্নে (Nabanna) বিশেষ সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “৩১ মে-র মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। আমরা অপেক্ষা করছিলাম। কোনও পদক্ষেপ করছিলাম না। কারণ অপেক্ষা করছিলাম, রিভিউ আলোচিত হবে। তার ভিত্তিতে কোর্ট যে নির্দেশ দেবে, তা চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে হতে পারে। তাই অপেক্ষা করেছি। আমরা বলেছি, চাকরি খেতে চাই না। যেহেতু রিভিউ হয়নি, পিটিশন পেন্ডিং। সুপ্রিম কোর্টে গরমের ছুটি। আমাদের হাত বাঁধা, ৩১ মের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে।“

এর পরেই দুটো অপশনের কথা জানান মমতা। বলেন, “স্কুলে যাচ্ছেন, যান। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ডিসেম্বর পর্যন্ত মাইনে পাবেন। যথাযথ জায়গায় মর্যাদার সঙ্গে ফিরে আসার জন্য নিজেদেরটা রক্ষা করুন। সুযোগ আসবে। সদ্ব্যবহার করুন। কোর্টের নির্দেশ না মানলে ২৬ হাজার শিক্ষক বিপদে পড়তে পারেন।“

মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, কারও চাকরি যাক তিনি চান না। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) নির্দেশ মানতে হবে। তাঁর কথায়, “রিভিউয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। বললে হবে না, পরীক্ষা দেব দেব না। তাহলে চাকরি থাকবে না। এটা আমাদের নির্দেশ নয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ। সরকার কোর্টে গিয়ে বাতিল করেনি। এটা আমাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়। কিছু স্বার্থপর মানুষ বাতিল করেছেন। আজ তাঁরা বন্ধু হয়ে ঢোকার চেষ্টা করছেন।“

এর পরেই দুটি অপশনের কথা জানান মমতা (Mamata Banerjee)। বলেন, “সকলকে বলব, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী, অপশন দুই এবং অপশন এক দুটোই কাজে লাগান। রিভিউ পিটিশন করে বিচার না পেলে, আপনারা পরীক্ষা না দিলে আর চাকরিটাই থাকবে না। কবে আদালত খুলবে জানি না। গরমের ছুটি শেষ হলে রিভিউ পিটিশন নিয়ে আবার এগোব। আমাদের আইনজীবীরা সাধ্যমতো লড়বেন। কিন্তু বিচারের দায়িত্ব বিচারপতিদের হাতে। মানবিক ভাবে তুলে ধরব, যাতে চাকরি বাতিল না হয়।“

পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, যাঁদের টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে, বলা হয়েছে চাকরির পরীক্ষায় বসতে পারবেন না, তাঁরা অন্য বিভাগে যোগদিতে পারেন। কোর্ট বলেছে। মমতা বলেন, “শিক্ষা বিভাগে লোক প্রয়োজন। ঘর পরিষ্কার, ঘণ্টা বাজানোর লোক নেই। অতিরিক্ত গ্রুপ সি, ডি নিচ্ছি। ওরা শিক্ষা বিভাগে আবেদন করতে পারেন। তবে আলাদা ভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন পোস্ট তৈরি করে নিয়োগ করা যাবে তাঁদের। গ্রুপ-সি, গ্রুপ ডির টা আলাদ ভাবে করব।“
আরও খবর: মোট ৪৪,২০৩টি শূন্য পদে নিয়োগে সুপ্রিম নির্দেশ মেনে ৩০ মে বিজ্ঞপ্তি জারি: ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যাঁরা চাকরি করেছেন, কিন্তু এখন আবেদন করার বয়স পেরিয়ে গিয়েছে, এ রকম অনেকে রয়েছেন। চাকরিহারাদের ক্ষেত্রে বয়সে ছাড় দেওয়া হবে। তাঁরা যাতে সকলেই পরীক্ষায় বসতে পারেন, বয়সের জন্য যাতে না আটকায়, সেই ব্যবস্থা হবে। যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতার জন্য সুবিধা দেওয়া হবে।

–

–

–

–
–
–
–