ঋতুস্রাবের জন্য ছুটি চাওয়াতে ছাত্রীর প্যান্ট খুলে প্রমাণ চাইল বিশ্ববিদ্যালয়। এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে চিনের ঘটেছে বেজিংয়ের একটি নামী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অভিযোগ, ছুটির প্রমাণ জানতে ছাত্রীকে প্যান্ট খুলে দেখাতে নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি সামনে আসার পর থেকে সমাজমাধ্যম জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।

চিনের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ওই ছাত্রী শারীরিক অসুস্থতার কারণ হিসেবে ঋতুস্রাবের কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চায়। কিন্তু ছুটি না দিয়ে তাঁর কাছে ঋতুস্রাবের প্রমাণ চাওয়া হয়। ছাত্রীর অভিযোগ, এক স্বাস্থ্যকর্মী তাঁকে কলেজের ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে প্যান্ট খুলে প্রমাণ করতে বলে ঋতুস্রাব চলছে কি না। ঘটনার পর ওই ছাত্রী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা কী মানুষ নই? মাসিকের মতো স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া নিয়ে এমন অবমাননাকর আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।” তিনি আরও বলেন, “মহিলারা মাসিকের সময় কীভাবে ছুটির আবেদন করতে পারেন, সে বিষয়ে একটি ন্যায্য এবং সম্মানজনক নিয়ম থাকা প্রয়োজন।”

ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চিন জুড়ে সমাজমাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে। অধিকাংশই মনে করছেন, এই ধরনের নিয়ম নারী-অধিকার এবং ব্যক্তিগত মর্যাদার সরাসরি লঙ্ঘন। ব্যাপক বিতর্কের মুখে অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি বিবৃতি জারি করে জানায়, ছাত্রীকে তাঁর স্বাস্থ্যের বিষয়ে শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল এবং তাঁর সম্মতি পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে ওই বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়েছে, “কোনও যন্ত্রভিত্তিক বা শারীরিক পরীক্ষা করা হয়নি। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের বিতর্ক না তৈরি হয়, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মাবলিকে পুনরায় খতিয়ে দেখা হবে।”

এই ঘটনার পর চিনের শিক্ষাঙ্গনে মহিলাদের প্রতি আচরণ এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নীতির ন্যায্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। সমাজকর্মীদের একাংশ বলছেন, মাসিক কোনও রোগ নয়, বরং একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সেটিকে প্রমাণ করার মতো অপমানজনক নিয়ম কার্যত মানসিক নির্যাতনের শামিল।


চিনে নারী-স্বাস্থ্য এবং গোপনীয়তা সংক্রান্ত নিয়ম নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে। প্রশ্ন উঠছে—কোন সভ্য সমাজে এমন নিয়ম মান্যতা পেতে পারে!

আরও পড়ুন – WBCS পরীক্ষার সিলেবাস, পরীক্ষা পদ্ধতি: আপাতত হচ্ছে না বদল
_

_
_

_

_

_

_

_

_
