যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। এই কথা যেনো বার বার প্রমাণ করে দিচ্ছেন কোন্নগর(Konnagar) পুরসভার পুরপ্রধান স্বপন দাস(Swapan Das)। একদিকে পুরসভায় পুরপ্রধানের(Municipal Chaiman) চেয়ারে বসে সমস্ত প্রশাসনিক কাজ আর তার সাথেই নিজেদের প্রাচীন কাপড়ের দোকানে বসে কাপড় বিক্রি একসঙ্গেই চালান সমান তালে। কোনও কাজেই কোনো খামতি নেই। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবন স্বপন দাসের। যখন ১২ বছর বয়স তখন থেকেই রাজনীতিতে হাতে খড়ি। কংগ্রেসী পরিবার তাই সিপিএম আমলে অত্যাচার কম হয়নি স্বপন দাসের পরিবারের উপর। কিন্তু কোনকিছুই হার মানাতে পারেনি স্বপন দাসকে(Swapan Das)। ছোট বেলা থেকেই কংগ্রেস প্রার্থীর জন্য এলাকায় পোস্টার মারা বা প্রচারে বেরোনো দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু।এরপর কেটেছে অনেক সময়।কংগ্রেস ভেঙে তৈরি হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। আর যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করলেন তখন থেকেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল নেত্রীর নেতৃত্বে এলাকায় তৃণমূল করা। পুরো পরিবার কংগ্রেস বলে সিপিএম আমলে পড়াশোনা ভালো করেও জোটেনি কোনো চাকরি।তাই ছোট থেকেই পড়াশোনার সাথে এই কাপড়ের দোকান সামলানো ছিল স্বপন বাবুর কাজ। পড়াশোনা আর দোকান একসাথে চালানো ছিল তখনকার কাজ।আর এখন প্রশাসনিক কাজ আর সাথে জীবনযাপনের জন্য কাপড়ের দোকান চালানো দুটোই চলছে একসাথেই। জীবনে প্রথম ১৯৯৫ সালে কংগ্রেসের হয়ে পুরসভা ভোটে দাঁড়িয়ে জয়ী হওয়া।এরপর ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস দলে যোগ দিয়ে প্রথম কোন্নগর পৌরসভার তৃণমূল কংগ্রেসের পুরপ্রধান হন স্বপন দাস।এরপর কেটেছে এতগুলো বছর,কোন্নগর শহরের মানুষ কখনও খালি হাতে ফেরায়নি স্বপন বাবুকে।প্রত্যেক বার ভোটে প্রার্থী আর প্রত্যেকবার জয়।এই বার নিয়ে পুরসভার তিন বার পুরপ্রধান হন স্বপন দাস। দল প্রত্যেক সময় ভরসা রেখেছেন দলের এই প্রবীণ নেতার উপর। আর দলকেও কখনও নিরাশ হতে হয়নি।দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে রাজনীতির সাথে যুক্ত স্বপন বাবুকে সব সময় পাওয়া যায় মানুষের সাথে। তার রোজকার দিন চলে মানুষকে নিয়েই।প্রত্যেকদিন সকালে প্রথমে পুজো সেরে চন্ডি পাঠ আর গীতা পাঠ।তারপর পৈতৃক কাপড়ের দোকানে গিয়ে দোকান সামলানো আর তারপর চলে যাওয়া পুরসভায়।সেখানে পুরসভার সমস্ত কাজ সামলে আবার সন্ধে থেকে রাত অবধি কাপড়ের দোকানে।আর দোকান চালানোর সময় শুধু কাপড় বিক্রি নয়,সেখানেও মানুষ হাজির হয় নিজেদের সমস্যা নিয়ে আর দোকানে থেকেও স্বপন দাস মানুষের সমস্যা মেটান হাসি মুখেই।

এই বিষয়ে স্বপন দাস বলেন,ছোট থেকেই রাজনীতি নিয়েই বড় হয়েছি। দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে রাজনীতির সাথে জুড়ে আছি।পড়াশোনার সাথে রাজনীতি আবার দোকান সবটাই করতে হতো।তখন সিপিএম ক্ষমতায় আর আমরা কংগ্রেস করতাম বলে জোটেনি কোনো চাকরি।তাই সংসার চালাতে এই দোকান সব সময় ভরসা।আর রাজনীতি আমার পেশা কখনোই নয়।রাজনীতি করি মানুষের জন্যই।আর সেই কারণেই এখানকার মানুষ আমায় কখনও খালি হাতে ফেরায় নি।আর পদ পেলেও নিজের পুরোনো জায়গা কখনও কাউকেই ভুলতে নেই।আর প্রশাসনিক কাজ সামলে দোকান সামলাতে কোনো অসুবিধা হয়না।কারণ এটা দীর্ঘদিনের অভ্যাস হয়ে গেছে।যতদিন দল চাইবে ততদিন মানুষের পাশে থেকে দলটা করে যাবো।আর সঙ্গে মানুষের জন্য কাজ করে যাবো।

আর এই বিষয়ে স্বপন বাবুর দোকানে কাপড় কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন,আমরা স্বপন বাবুকে দীর্ঘদিন ধরেই দেখে আসছি।স্বপন বাবুকে সব সময় আমরা পাশে পাই।আর দোকানে এলেও কখনও বেশি দাম নিতেও দেখিনি।বরং অন্যান্য দোকানের থেকে এখানে কাপড়ের দামটাও কম।আর দোকানে তো শুধু কাপড় কিনতে আসা হয়না।কখনও কোনো সমস্যা হলেও আসা হয় আর পুরপ্রধান স্বপন দাস হাসি মুখেই সবার কাজ করে দেন।আর স্বপন বাবুকে পুরসভার পুরপ্রধান হওয়ার পর দেখেছি কোন্নগর শহরের আমূল পরিবর্তন হয়েছে।প্রত্যেক জায়গায় ব্যাপক কাজ করেছে পুরসভা।আর এটা সত্যি এখন দেখা যায়না যে পুরপ্রধান হয়েও সে তার পুরনো জায়গাটা ভুলে যায়নি।তাই আমাদের মত সাধারণ মানুষ সব সময় স্বপন দার সাথেই আছি আর থাকবো।।

–


–

–
–

–
–

–

–

–

–

–

–
