তিন বছর কেটে গেল, তবু বাংলার প্রাপ্য একশো দিনের কাজের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার মঞ্জুর করেনি। অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই কেন্দ্র সরকার এই বঞ্চনার পথে হেঁটেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার বারবার দাবি তুললেও, ২০২২ সালের ৯ মার্চ থেকে কেন্দ্রের তরফে কোনও অর্থ ছাড় করা হয়নি। এর জেরে রাজ্যের প্রাপ্য দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। অথচ এই একই সময়কালে বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মহারাষ্ট্র এবং ক্ষমতা দখলের লক্ষ্য রেখে তামিলনাড়ুকে একাধিকবার বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। অভিযোগ উঠছে, এই তিন রাজ্যকে বিগত তিন বছরে দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বাংলার প্রাপ্য ছিল ৭,৫০৮ কোটি টাকা। তা আটকে রেখে তামিলনাড়ুকে দেওয়া হয়েছে ৯,৭০৭ কোটি টাকা। পরের বছর, অর্থাৎ ২০২৩-২৪-এ এই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২,৬০৩ কোটি টাকায়। একইভাবে, বিহার পেয়েছে ১০,২৬৯ কোটি এবং মহারাষ্ট্র ৪,৯০০ কোটি টাকা।

কেন্দ্রের যুক্তি—বাংলা একশো দিনের প্রকল্পের নিয়ম মানেনি। কিন্তু রাজ্য সরকার বলছে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রতিটি টাকার হিসেব কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও টাকা আটকে রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে, অভিযোগ উঠছে—যে রাজ্যগুলিকে অর্থ দেওয়া হচ্ছে, তারা শ্রমিকদের মজুরি না দিয়ে সেই টাকা খরচ করছে শিল্প-উন্নয়ন এবং যন্ত্রপাতি কেনার পেছনে। অথচ, কেন্দ্রীয় নিয়মে এর কোনও অনুমতি নেই।

রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের প্রশাসন থেকে শুরু করে সাধারণ শ্রমিকরাও এই অবিচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাদের দাবি, অবিলম্বে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ মঞ্জুর করতে হবে এবং সকলকে সমান আচরণ করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে—বাংলার বঞ্চনা কি শুধুই আর্থিক, না কি এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নগ্ন উদাহরণ?

আরও পড়ুন – অভিষেক-সহ বিদেশ সফর ফেরত সর্বদলীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে মঙ্গলে দিল্লিতে বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর

_

_

_

_

_

_
_
_
_
_
_