রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘পাকিস্তানের হয়ে কথা বলা’ মন্তব্যকে ঘিরে ফের উত্তাল হল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। মঙ্গলবারের এই মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হয়। তৃণমূল কংগ্রেস কড়া ভাষায় এর প্রতিবাদ জানিয়ে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনল। এরপরই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস এবং ইন্দ্রনীল সেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিশ জমা দেন। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই ধরনের অবমাননাকর ও মিথ্যাভাষণ বিধানসভার মর্যাদাকে খাটো করেছে। বুধবার অধিবেশনে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন স্পিকার। পাশাপাশি তিনি মন্তব্য করেন, বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্য ‘অনভিপ্রেত’ এবং মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বিকৃত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

তৃণমূলের অভিযোগ, বিধানসভার বাইরে সংবাদমাধ্যমের সামনে শুভেন্দু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ‘পাকিস্তানের হয়ে কথা বলছেন’। এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি অসংসদীয় আচরণের জন্য শুভেন্দু ও আরও তিন বিজেপি বিধায়ককে একমাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিলেন স্পিকার। ১১ মার্চও তাঁর একটি মন্তব্যকে ঘিরে বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল।

এদিন ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রস্তাব নিয়েও বিধানসভায় হাইভোল্টেজ বিতর্ক হয়। বিজেপি প্রশ্ন তোলে, কেন প্রস্তাবে ‘সিঁদুর’ শব্দটি বাদ রাখা হল? এর উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, তার কোনও ধর্ম নেই। সেনার শহিদদের প্রতি আমাদের সমর্থন অটুট।”

অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, তৃণমূল সরকার সেনার কৃতিত্বকে খাটো করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এই শব্দ বাদ দিয়েছে। তিনি ‘টার্গেট কিলিং’ এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’ শব্দগুলি প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তোলেন।


ওবিসি সংরক্ষণ নিয়েও তর্কাতর্কিতে জড়ায় শাসক ও বিরোধীপক্ষ। বিজেপির অভিযোগ, ধর্মীয় ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যা অসাংবিধানিক। মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা বলেন, “ওবিসি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ আর্থিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে, ধর্মের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।”


সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, আসন্ন সোমবার বাদল অধিবেশনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিধানসভাতেই মন্ত্রিসভার বৈঠক বসতে পারে। সব মিলিয়ে বাদল অধিবেশনকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে ফের একবার তাপ-উত্তাপ চরমে। কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয় সরকার ও বিরোধী শিবির, এখন তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন – আর জি কর রিপোর্টে অসন্তোষ নির্যাতিতার বাবা-মায়ের! কটাক্ষ শাসকদলের

_
_
_

_

_

_

_

_