পহেলগাম হামলার দুই মাস অতিক্রান্ত। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। তার জবাব নেই ৬১ দিন পরও। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী— সবাই চুপ! দেশের নিরাপত্তা, সীমান্ত সুরক্ষা, সন্ত্রাস দমন, বিদেশ নীতির প্রশ্নে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তাঁরা। তবে কি ভোট এলে শুধু ভাষণ দেন এঁরা, প্রশ্ন তৃণমূলের। তবে কি মোদির বিদেশনীতি আর আত্মসমর্পণের কূটনীতি সমার্থক? এটাই কি তবে ১৪০ কোটি দেশবাসীর নিরাপত্তায় মোদির গ্যারান্টি? মোদির নীরবতায় তৃণমূল গর্জে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পহেলগাঁওয়ে নিরীহ মানুষ খুনের পর বিশ্বমঞ্চে পাকিস্তানের জয়যাত্রা অবাহত রয়ে্ছে। আর বিশ্বগুরু হওয়ার স্বপ্নে দেশ আজ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অপমানের শিকার হচ্ছে। এবার কী বলবেন মোদিজি?
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি পাঁচটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন। এক, ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে কীভাবে ঢুকল জঙ্গিরা? বিএসএফ থেকে শুরু করে নিরাপত্তরক্ষীরা কোথায় ছিলেন? দুই, যদি গোয়েন্দা ব্যর্থতাই হয়ে থাকে তাহলে গোয়েন্দাকর্তার চাকরির মেয়াদ কেন বৃদ্ধি করা হল এবং তাও আবার হামলার একমাস পরে? তিরস্কারের বদলে কী করে পুরস্কার পেলেন? তিন, সন্ত্রাসবাদীরা যারা হামলা চালাল তারা কোথায়? জীবিত না মৃত? কিছুই জানাতে পারেনি কেন্দ্র। চার, পাক অধিকৃত কাশ্মীর কবে ভারতের দখলে আসবে? যুদ্ধ থামিয়েছেন নাকি মার্কিন রাষ্ট্রপতি! এই বক্তব্য খণ্ডন কেন করা হয়নি? পাঁচ, আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ভারতের ব্যর্থতা স্পষ্ট। পহেলগামের ঘটনার পর ক’টি রাষ্ট্র ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে? এ-প্রশ্নের উত্তর কোথায়?
অভিষেকের সেই প্রশ্নগুলি তুলে ধরেই তৃণমূল ফের জানতে চেয়েছে, ভারত যদি সত্যিই বিশ্বগুরু তাহলে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্ক পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য করল কেন! ৪১ বিলিয়ন ডলার অনুমোদন করা হয়েছে তাঁদের। আর কীভাবেই বা পাকিস্তান রাষ্ট্রসংঘের সন্ত্রাসবিরোধী কমিটির সহ-সভাপতি হল! মোদিজি নীরবতা ছেড়ে এই প্রশ্নের জবাব দিন। নাহলে আপনার এই নীরবতা জাতীয় স্বার্থের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বলে্ই গণ্য হবে। তৃণমূলের তরফে আরও জানতে চাওয়া হয়েছে, কতগুলি দেশে সরাসরি ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে? প্রশ্ন তোলা হয়েছে বিশ্বমঞ্চে মোদির আধিপত্য নিয়েও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানকে ভালোবাসেন, পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারেন, বাণিজ্যের লাল গালিচা বিছিয়ে দেন। আবার কুয়েত পাকিস্তানি নাগরিকদের উপর থেকে ১৯ বছরের ভিসার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। আইএমএফ পাকিস্তানকে তাৎক্ষণিকভাবে ১ বিলিয়ন ডলার সাহায্যের অনুমোদন দেয়। পাকিস্তানের জনসাধারণের সমস্যা সমাধান করার জন্য এডিবি ৮০০ মিলিয়ন ডলার দেবে বলে জানায়। আবার পাকিস্তান এখন তালিবান নিষেধাজ্ঞা কমিটির সভাপতি এবং রাষ্ট্রসংঘের সন্ত্রাস দমন কমিটির সহ-সভাপতি, কী করে সম্ভব, ‘বিশ্বগুরু’ জবাব দিন।
আরও পড়ুন – কালীগঞ্জের ফলপ্রকাশের প্রস্তুতিতে চূড়ান্ত নজরদারি, গণনাকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়
_
_
_
_
_
_
_
_
_
_
_