Wednesday, November 26, 2025

কথা দিয়ে কথা রাখেনি DVC! বিধানসভায় ক্ষোভ উগরে দিলেন সেচমন্ত্রী মানস

Date:

Share post:

রাজ্য সরকারের আগাম অনুরোধ ও আবেদন সত্ত্বেও কথা রাখেনি ডিভিসি। নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে আচমকা ৭০,০০০ কিউসেক জল ছেড়ে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতিকে জটিল করেছে। অথচ মাত্র মাসখানেক আগেই রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, সম্ভাব্য বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে DVC থেকে জলছাড় সর্বোচ্চ ৫০,০০০ কিউসেকে সীমিত রাখা হবে। সোমবার বিধানসভায় বিস্ফোরক অভিযোগ সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার (Manas Bhuiya)। মন্ত্রী জানান, ২০ জুন রাত ১১টা নাগাদ DVC ৭০,০০০ কিউসেক জলছাড় শুরু করে। দামোদর ভ্যালি রেগুলেটরি কমিশনের-র হিসেব ছিল, এই জল দুর্গাপুর ব্যারাজে পৌঁছবে ২১ জুন দুপুর ১টা থেকে ৩টার মধ্যে। বাস্তবে সেই জল পৌঁছে যায় সকাল ৮টায়। অথচ সেই সময় পাঞ্চেতের জলস্তর ছিল মাত্র ৪১৪.১৮ ফুট, ডিভিসি-র অনুমান করা স্তরের অনেক নীচে। রাজ্য সরকারের তরফে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও জলছাড় কমানো হয়নি। পরে রাজ্যের চিঠির ভিত্তিতে ২২ জুন জলছাড় ধাপে ধাপে কমিয়ে ৪২,৫০০ কিউসেকে নামানো হয়।

এই জল ছাড়ার জেরে ঘাটাল মহকুমা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘাটালের ১০০টি গ্রাম পঞ্চায়েত, চন্দ্রকোণা-১-এর ৫টি এবং চন্দ্রকোণা-২-এর ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত জলের তলায় চলে যায়। ঘাটাল ও খড়ার পুরসভার বহু ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। মোট ১৮৮টি গ্রাম জলমগ্ন। ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২ লক্ষ। সেচমন্ত্রী (Manas Bhuiya) জানান, প্রায় ২০০০ জনকে উদ্ধার করে আশ্রয় শিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে। চন্দ্রকোণা-১এ ১৫টি, চন্দ্রকোণা-২-এ ৮টি এবং ঘাটালে ১০টি মিলিয়ে মোট ৩৩টি ত্রাণ শিবির চালু হয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের সিভিল ডিফেন্সের ১০টি স্পিডবোট রিলিফ ও উদ্ধারকাজে নিয়োজিত। প্রত্যন্ত এলাকায় চালু হয়েছে মেডিক্যাল ক্যাম্প ও দুয়ারে ডাক্তার পরিষেবা। মোবাইল পানীয় জল ট্রিটমেন্ট ইউনিট ও ট্যাঙ্কার মারফত জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

বন্যায় সাপে কাটা আটজনকে ভর্তি করা হয়েছে ঘাটাল হাসপাতালে। জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে দুই বাসিন্দার- চন্দ্রকোণা-১-এর আজাবুল আলি ও চন্দ্রকোণা-২-এর তুলসী রুইদাস।
আরও খবরবিধানসভায় পাশ ‘স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি বিল’, খেলার বিকাশে বেসরকারি উদ্যোগই ভবিষ্যৎ: শিক্ষামন্ত্রী

মন্ত্রী জানান, ১৫ মেট্রিক টন পশুখাদ্য বিতরণ, ২০ হাজার ত্রিপল, ৫৫ মেট্রিক টন চাল ও ২০ হাজার জামাকাপড় বিলি করা হয়েছে। কৃষি দফতরের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী তিল, বাদাম, পাট ও সবজির চাষ মিলিয়ে ২২০৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। মন্ত্রী আশ্বাস দেন, “সেচ দফতরের সমস্ত আধিকারিক জেলার প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছেন। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায় আন্তঃরাজ্য সমন্বয়ের গুরুত্ব যে কতখানি, ডিভিসির এই মনোভাব ফের একবার তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।”

spot_img

Related articles

ভেরিফিকেশন পর্ব শেষ: বৃহস্পতিবার শুরু এসএসি-র ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ডিসেম্বরের মধ্যে এসএসসি-তে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করতে সব পদক্ষেপই নিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর...

চুক্তিভঙ্গ, যাত্রাভঙ্গ: হেলিকপ্টার সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের

মুখ্যমন্ত্রীর মতুয়া গড়ে যাওয়া নির্দিষ্ট থাকলেও তাতে কী গুরুত্ব দেয়নি হেলিকপ্টার সংস্থা? শেষ মুহূর্তে তাদের বিমার সমস্যায় হেলিকপ্টারে...

কীভাবে SIR চক্রান্ত বাংলায়: বিজেপিকে তোপে বনগাঁ থেকে বোঝালেন মমতা

এসআইআরের নামে এনআরসি করার চক্রান্ত চলছে! এমনই তোপ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বনগাঁর জনসভা থেকে তিনি অভিযোগ করেন,...

মন্দিরবাজারের সভা থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ তৃণমূলের, শুভেন্দুকে কটাক্ষ সুদীপের

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারে তৃণমূল কংগ্রেসের সভায় রবিবার জনস্রোত চোখে পড়ার মতো। সভার নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র সুদীপ...