রাজ্যে ক্রীড়া ক্ষেত্রে পরিকাঠামো ও পেশাদার মানোন্নয়নে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগও প্রয়োজন। কথা জোর দিয়ে তুলে ধরলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। সোমবার, বিধানসভায় (Assembly) ‘দ্য নেতাজি সুভাষ ইউনিভার্সিটি অফ স্পোর্টস অ্যান্ড অন্ত্রপ্রেনিয়রশিপ বিল, ২০২৫’ নিয়ে আলোচনার শেষে জবাবি বক্তৃতায় ব্রাত্য বলেন, “সরকার প্রতিভাকে লালন করতে পারে। কিন্তু সেই প্রতিভা খুঁজে বের করে পরিপূর্ণ করে তোলার দায়িত্ব শুধু সরকারের পক্ষে পালন করা সম্ভব নয়। এই কাজে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রকে হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।”

হুগলির (Hoogli) চুঁচুড়ায় গড়ে উঠবে রাজ্যের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বেসরকারি ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়। স্পোর্টস সায়েন্স, স্পোর্টস টেকনোলজি, ম্যানেজমেন্ট, স্পোর্টস ল ও কোচিংয়ের উপর উচ্চশিক্ষার সুযোগ মিলবে এই নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বিলটি আলোচনা শেষে ধ্বনি ভোটে গৃহীত হয়।

বিল নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী ISF বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী খেলোয়াড়দের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দাবি তোলেন। তাঁর বক্তব্যের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সংকীর্ণ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে খেলাধুলাকে উৎসাহিত করছেন। এখন শুধু আন্তর্জাতিক স্তরে সাফল্য পাওয়া নয়, ঘরোয়া প্রতিভাকেও কাজের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের মাসিক ভাতার পাশাপাশি সম্মানও জানানো হচ্ছে।”

সদ্য শেষ হওয়া ন্যাশনাল স্কুল গেমসে বাংলা প্রথমবারের জন্য সেরা দশে স্থান পেয়েছে, সপ্তম স্থান অধিকার করেছে—যা রাজ্যের ক্রীড়ানীতির সফলতার বড় দৃষ্টান্ত বলে দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী খেলোয়াড়দের পাশে থাকেন। এই রাজ্যে ক্রীড়া শুধু প্রতিযোগিতা নয়, তা শান্তির বার্তা বহন করে। আর সেটা সম্ভব হয়েছে একান্ত উদ্যোগ আর সহযোগিতার মাধ্যমে।”


বক্তৃতার শেষে নাম না করে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে ব্রাত্য (Bratya Basu) বলেন, “এর আগের তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিল এখনও হিমঘরে পড়ে আছে। জানি না এই বিলটিরও সেই একই পরিণতি হবে কি না! হয়তো কেন্দ্রীয় সরকার চায় না দেশের খেলাধুলার সৌরভ বিশ্বের দরবারে ছড়িয়ে পড়ুক।”
আরও খবর: আদালত অবমামনা মামলায় রুল নিয়ে শুনানিতে কুণালকে সশরীরে হাজিরা থাকা থেকে অব্যাহতি হাই কোর্টের


ক্রীড়া নিয়ে বিরোধীদের নীরবতা প্রসঙ্গেও প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নামেই ‘উদ্যোগ’ শব্দটি লুকিয়ে আছে, অথচ বিরোধীরা কোনও ইতিবাচক আলোচনা না করে শুধু মার্শালের সঙ্গে নাটক করছে। ওদের কাছ থেকে খেলাধুলার উন্নয়ন নিয়ে কোনও গঠনমূলক বক্তব্য আসেই না।”
সব মিলিয়ে ক্রীড়াক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনার পথে পশ্চিমবঙ্গ। এবার বেসরকারি ক্ষেত্রের সক্রিয় অংশগ্রহণে রাজ্য ক্রীড়া মানচিত্রে আরও উজ্জ্বল হবে, এই আশাই করছেন নীতি নির্ধারকরা।

–
–
–

–

–

–

–
