প্রশাসনিক তৎপরতায় মুছে গেল ভেদাভেদ রেখা। এক হাঁড়িতেই পূর্ব বর্ধমানের নসরতপুরের কিশোরীগঞ্জ মনমোহনপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল (MidDay Meal) রেঁধে খাওয়ানো হল খুদে পড়ুয়াদের। অভিযোগ, ওই স্কুলে দুই সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা আলাদা ওভেনে রান্না হত। এই খবর সামনে আসতেই পদক্ষেপ প্রশাসনের। বুধবার থেকেই পাশাপাশি বসে এক হাঁড়িতে রান্না মিড ডে মিল খেল পড়ুয়ারা।
পূর্বস্থলীর কিশোরগঞ্জ স্কুলে গত ২৫ বছর ধরে মিড ডে মিলের (MidDay Meal) রান্না হিন্দু পড়ুয়াদের করতেন হিন্দু রাঁধুনি। মুসলিম পড়ুয়াদের রান্না করতেন মুসলিম রাঁধুনির। একটি সিলিন্ডার থেকে দু’টি আলাদা গ্য়াসের পাইপ দু’টি ওভেন (Oven) লাগিয়ে রান্না হচ্ছিল। বাংলার সংস্কৃতির বিরোধী এই ভেদাভেদ প্রথায় খরচও বাড়ছিল। প্রধান শিক্ষক (Head Master) পদে স্কুলে যোগ দিয়েই তাপস ঘোষ (Tapas Ghosh) এই বিষয়ে আপত্তি তোলেন। বুধবারই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ছিলেন পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি, বিদ্যালয় পরিদর্শক। জেলাশাসকের তরফে স্কুলে একটি পরিদর্শক দলও পাঠানো হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ভেদাভেদ মুছে একসঙ্গে মিড ডে মিলের রান্না হবে।
সেই মতো এক হলো রান্নার উনুন থুড়ি ওভেন। হিন্দু রাঁধুনি রান্না করেছেন। আর মুসলিম রাঁধুনি তাঁকে সাহায্য করেন। বাংলার সম্প্রতির ছবি বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে। একসঙ্গে খেয়েছে পড়ুয়ারা। তাপস ঘোষ বলেন, “আমি এই স্কুলে এক বছর হল এসেছি। তখন থেকেই দেখছি, এ ভাবেই রান্না হচ্ছে। তবে আলাদা রান্না করা একেবারে কাম্য নয়। আমি আসার পর স্কুলের পরিচালন কমিটিকে জানিয়েছিলাম। তবে আজ থেকে একসঙ্গেই রান্না হচ্ছে।“
বিষয় মিটে গেলেও কেন এই নিয়ম চলছিল, তা নিয়ে চিন্তিত অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) প্রতীক সিং। তিনি জানান, একটি দল জেলাশাসকের নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। কেন দু’টি আলাদা ওভেনে রান্না হচ্ছিল? কে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন? সবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তের ভিত্তিতে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
আরও খবর: স্যোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো-বিদ্বেষপূর্ণ পোস্টে কড়া আইনি ব্যবস্থা: সতর্ক করল কলকাতা পুলিশ
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–