বিহারের নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘুরপথে NRC চালুর অপচেষ্টা বিজেপির! আর এই ষড়যন্ত্রের কারিগর বা মাধ্যম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের জারি করা নির্দেশিকায় সেই তত্ত্বই সামনে আসছে। বৃহস্পতিবার দিঘাতেই জরুরি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এই ভয়ংকর ষড়যন্ত্র প্রকাশ্যে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়, এরা ঘুরপথে এনআরসি করতে চাইছে। কিন্তু এটা NRC-র থেকেও ভয়ংকর। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। আপাতত যেটুকু তথ্য পাওয়া গিয়েছে সেটুকু আপনাদের জানালাম। আরও বিশদে আমরা খতিয়ে দেখছি। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাবে তৃণমূল (TMC)।

বাংলাকে টার্গেট করে এই ষড়যন্ত্র মুখ্যমন্ত্রী বাকি রাজনৈতিক দলগুলিকেও এ বিষয়ে নিজেদের মতো করে ভেবে দেখতে অনুরোধ করেছেন। সেইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তৃণমূল সুপ্রিমোর বার্তা, এই ভুল শুধরে নিন। শুধু তাই নয়, জাতীয় নির্বাচন কমিশনারের নাম না করে, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সচিব হিসেবে একসময় কাজ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন মমতা। এরপরই তোপ দেগে ফের তিনি অভিযোগ করেন, এখন তো দেশ চালাচ্ছেন অমিত শাহ।

বিহারের জন্য জারি করা কমিশনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে (যা গোটা দেশের জন্যই লাগু হবে) শুরু হচ্ছে বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়া (স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR)। ভোটার তালিকা থেকে অবৈধ নাম বাদ দেওয়া এবং প্রকৃত ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশ্যে করা হবে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা। সেইসঙ্গে বলা হয়েছে, ১৯৮৭ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে যারা জন্মেছেন তারাই ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন।

এই সালের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম তো ১৯৮৭ সালের নভেম্বর মাসে। নির্বাচন কমিশনের জারি করা নির্দেশিকায় সাধারণ মানুষের বাবা-মায়ের জন্ম জায়গা ও জন্ম সার্টিফিকেট দাখিল করতে বলা হয়েছে। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটা কী হচ্ছে? গোটা বিষয়টি তে বিরাট ঘাপলা রয়েছে। আরও ঘাপলা বেরোবে। এরা বাংলাকে কি টার্গেট করেছে! পরিযায়ী শ্রমিকদের টার্গেট করেছে। আসলে ভোটার তালিকা থেকে সব জেনুইন ভোটারদের নাম বাদ দিয়ে বাইরে থেকে নাম ঢোকাবে।
আরও খবর: দিঘার জগন্নাথধামে সরেজমিনে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী, জানালেন রথযাত্রার সূচি


মমতার অভিযোগ, কিছুদিন আগে চিঠি দিয়ে তৃণমূলের বুথ লেভেল কর্মীদের নাম ও ফোন নম্বর চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেন? এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন নেত্রী। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলি কোনও বন্ডেড লেবার নয়। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে। তারপর এতগুলো বছর কেটে গিয়েছে। এখন এই বিজ্ঞপ্তি বা নির্দেশিকা জারি করার মানে কি? তুমি সরাসরি কৈফিয়ত চেয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ”আমরা ব্যাটিংটা শুরু করলাম। বাকি রাজ্যগুলো বোলিং করুক এবার। তবে বিজেপির এই ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত কিছুতেই আমরা বাংলায় হতে দেব না।”


–
–

–
–
–

–

–

–

–
