বাংলায় ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র ৪৮-এর বেশি আসন দেখাচ্ছে না অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা। ফলে দিল্লির বিজেপি নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্বকে তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফলে ঘুর পথে ভোটার লিস্টে কারচুপি করে কৌশল খাটানোর চেষ্টা করছে। বিহার নির্বাচন বাহানা। ওদের (BJP) টার্গেট বাংলা। শনিবার, তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক করে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) নির্দেশকে নিশানা করলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) ও তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। কেন্দ্রীয় সরকার নিরপেক্ষ সংস্থাগুলির রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে বলে তোপ দাগেন চন্দ্রিমা।
নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) নির্দেশ নিয়ে দিঘা থেকেই তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই সূত্র ধরেই এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে কেন্দ্রকে নিশানা করেন চন্দ্রিমা, কুণাল। রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার নিরপেক্ষ সংস্থাগুলির রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে। আর সেই সংস্থাগুলি বিজেপির হয়ে কাজ করছে- বলে অভিযোগ তুল চন্দ্রিমা বলেন, “আমরা চাই নিরপেক্ষ সংস্থাগুলো তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখুক।“
গেরুয়া শিবিরকে তীব্র আক্রমণ করে চন্দ্রিমা বলেন, “সব রাজ্যের নির্বাচন একটি রাজনৈতিক দলকে দখল করতে হবে তাই স্বশাসিত যে সংস্থাগুলি আছে সেগুলিকেও ব্যবহার করছে। ১-০৭-৮৭ থেকে ০২-১২-২০০৪-এর মধ্যে যাঁদের জন্ম তাঁদের ভোটার তালিকায় নাম তুলতে গেলে একটা বিশেষ ঘোষণা পত্রে সই করতে হবে এবং তাঁদের বাবা-মায়ের জন্মের সার্টিফিকেট দিতে হবে।“ এর পরেই মন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, “হঠাৎ ৮৭ সাল বাছা হল কেন? যাংরা ওই সময় জন্মেছে তাঁদের বাবা-মায়ের কত বয়স হবে! তাঁরা তাঁদের জন্মের সার্টিফিকেট জোগাড় করবে কি করে? আগে কি এসব ছিল? তাঁদের জন্ম সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে না খুব স্বাভাবিক। তাহলে তাঁদের নাম বাদ দেবে। ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা। এটা ঘুরপথে এনআরসির দিকে নিয়ে যাওয়ার চক্রান্ত।“ তৃণমূলের অভিযোগ, নির্বাচনের এত পরিবর্তন হবে বাকি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হল না, পরামর্শ হল না। বিহারের ভোট শুধু দেখা যাচ্ছে কিন্তু অন্য টার্গেট হলো বাংলা। বিজেপি অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে বুঝতে পেরেছে বাংলায় কোনও কাজ করতে পারবে না। তাই এইভাবে উদ্দেশ্য সাধন করতে চাইছে।
এর পরেই তৃণমূলের মন্তব্য, কিছু পরিবর্তন করতে চাইলে ঠিক কারও নাম বাদ দিতে চাইলে অবশ্যই পদ্ধতি মেনে চলুন। কাউন্টিং এর সময় বিশেষ এনিউমারেশনের পদ্ধতি আনতে চাইছে তাহলে কি নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ? ২০০৩ থেকে তাহলে যাঁরা মন্ত্রী হয়েছেন দেশ চালাচ্ছেন তাহলে কি তাঁরাও বাতিল হয়ে যাবেন? তাঁদের কি হবে? রাজ্যের এবং দেশের ভোটাররা সচেতন থাকুন। এটা তাদের অধিকার সংবিধান দিয়েছে। এই অধিকারে যারা হাত বসাচ্ছে নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে আসছে তাদের থেকে সজাগ থাকুন তৃণমূল কংগ্রেস এ বিষয়ে সকলের পাশে আছে। আন্দোলনে প্রয়োজন হলে মাঠে নামবে।
পদ্মশিবিরকে নিশানা করে, কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপি একটা অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা করেছে। সেখানে ২০২৬-এর ভোটে ওদের ৪৮-এর বেশি আসন দেখাচ্ছে না। দিল্লির বিজেপিও রাজ্য নেতৃত্বকে তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাই ঘুর পথে ভোটার লিস্টে কারচুপি করে কৌশল খাটানোর চেষ্টা করছে। বিহার বাহানা। বাংলা ওদের টার্গেট।“ এর পরেই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ স্পষ্ট বলেন, “বেঙ্গল কাভি ঝুঁকেগা নেহি। নির্বাচন কমিশন নিজেদের মুখোশ খুলে ফেলে যদি দলদাসের মতো আচরণ করে তাহলে তৃণমূল বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে। আড়াইশোর বেশি আসন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চতুর্থবার মা-মাটি-মানুষের সরকার বাংলায় শপথ নেবে।“
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–