গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের ৩৪১টি ব্লক পাবলিক হেলথ ইউনিটে এবার পরীক্ষার রিপোর্ট মিলবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। ফলে পরীক্ষার গতি যেমন বাড়বে, তেমনি নির্ভুলতা ও চিকিৎসায় স্বচ্ছতাও আসবে—এমনটাই দাবি স্বাস্থ্য দফতরের।

এই প্রকল্পের বাস্তবায়নে কাজ করছে ওয়েবেল টেকনোলজি লিমিটেড। ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (LIMS)। এই ব্যবস্থায় নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে রিপোর্ট তৈরি পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি হবে স্বয়ংক্রিয়। ল্যাব অ্যানালাইজার থেকে সরাসরি রিপোর্ট পাঠানো হবে সিস্টেমে, ফলে হাতে লিখে রিপোর্ট তৈরির প্রয়োজন পড়বে না, এবং ভুলের সম্ভাবনা প্রায় ৯০ শতাংশ কমে আসবে।

রিপোর্ট সংরক্ষিত থাকবে ইন্টিগ্রেটেড হেলথ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (IHMS)-এ, যেখানে প্রতিটি রিপোর্ট থাকবে রোগী ও নমুনার নির্দিষ্ট আইডি অনুযায়ী। রাজ্যের যে কোনও সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এই রিপোর্ট রিয়েল টাইমে দেখা যাবে। ফলে চিকিৎসা শুরু হবে দ্রুত, কমবে রোগী ও পরিজনের উদ্বেগ।

স্বাস্থ্য ভবনের সূত্র জানাচ্ছে, প্রতিটি ব্লকে রিপোর্টিং ব্যবস্থার অগ্রগতি দেখার জন্য একটি রিয়েল টাইম ড্যাশবোর্ড তৈরি করা হবে। কোনও যন্ত্র কাজ না করলে বা ব্যতিক্রম দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সতর্কবার্তা দেবে সিস্টেম। এর ফলে পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনাও কমবে।

প্রকল্পের অধীনে তৈরি হচ্ছে একটি মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েব পোর্টাল, যার মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর্মীরা সরঞ্জাম রেজিস্ট্রেশন, ওয়ার্ক শিডিউল, ডেটা ট্রান্সফার ও অভিযোগ জানাতে পারবেন। থাকছে ইউজার অথেন্টিকেশন ও রোল-বেসড নিরাপত্তা ব্যবস্থাও।

শুধু ল্যাব রিপোর্টই নয়, এক্স-রে ও সিটি-স্ক্যানের রিপোর্টও সংযুক্ত হবে IHMS-এ। সব তথ্য এনক্রিপ্ট করে সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষণের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যাকআপও নেওয়া হবে। যদিও সাধারণ রোগীরা সরাসরি এই ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত হবেন না, তবুও দ্রুত ও নির্ভুল রিপোর্ট পাওয়ার ফলে চিকিৎসার সুবিধা যে অনেকটাই বাড়বে, তা নিশ্চিত বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।

আরও পড়ুন – পুলিশের কাছেই আটকে গেল মোহনবাগান, হার দিয়ে শুরু যাত্রা

_

_

_

_
_
_
_
_