বাংলায় কথা বলার অপরাধে বিজেপি-শাসিত একের পর এক রাজ্যে লাগাতার হেনস্থা ও আটক করা হচ্ছে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, রাজস্থান, ওড়িশা— সর্বত্রই একই ছবি। সর্বশেষ ঘটনায় ওড়িশার কটক ও বালেশ্বরে ২৩ জন শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ।
পুর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর থানার কোটবাড় এলাকা থেকে চার শ্রমিক মাস দেড়েক আগে ওড়িশায় স্টিলের বাসন ফেরি করতে যান। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা কটকের নিশচিন্তকুলিতে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। কিন্তু ২৪ জুন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ওড়িশা পুলিশ তাঁদের বাড়িতে হানা দিয়ে পাঁচজনকে আটক করে। একজনকে ছেড়ে দিলেও চারজন এখনও আটক রয়েছেন বলে অভিযোগ। তাদের মধ্যে এক বাবা ও তাঁর দুই ছেলে রয়েছেন। পরিবারের দাবি, গত পাঁচদিন ধরে কোনও আদালতে তোলা হয়নি তাঁদের, আটকে রাখা হয়েছে থানাতেই। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন ও বিডিওর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পরিজনেরা।
একইসঙ্গে আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে বীরভূম জেলার নলহাটির ১৯ জন ফেরিওয়ালাকে ঘিরে। পরিবারগুলির দাবি, শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার জন্যই তাঁদের বালেশ্বর জেলার রেমুনা থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। ২৫ জুন সকাল ৯টা নাগাদ তাঁরা বাড়িতে ফোন করে জানান, পুলিশ তাঁদের কাগজপত্র ও মোবাইল রেখে দিয়েছে। তারপর থেকে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পরিবারের সদস্যদের আরও অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রেখেছে। এমনকি তাঁদের সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হচ্ছে না। দিন দশেক আগে ওই ১৯ জন ফেরিওয়ালা শুকরাবাদ, রামপুর ও পাইকর থেকে ওড়িশার বিভিন্ন গ্রামে প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের সামগ্রী বিক্রি করতে গিয়েছিলেন।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূল নেতা মহম্মদ মহসিন মণ্ডল। তিনি বলেন, “ওঁরা তিরিশ বছরের বেশি সময় ধরে ফেরি করছেন। হঠাৎ করে এতদিন পর তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটকে রাখা চক্রান্ত ছাড়া কিছু নয়।” সূত্রের খবর, এই ঘটনাগুলিকে কেন্দ্র করে বীরভূম ও পূর্ব মেদিনীপুরে চরম ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, এটি বিজেপির সাংস্কৃতিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক বিদ্বেষেরই অংশ। রাজ্য প্রশাসনের তরফে আটক শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য ইতিমধ্যেই ওড়িশা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, জানিয়েছে একটি সূত্র।
আরও পড়ুন – নতুন বাংলাদেশ দিবস: ঘোষণা করেও পিছু হটল ইউনুস সরকার
_
_
_
_
_
_
_
_
_