শনিবার উল্টোরথ, জগন্নাথের পুনর্যাত্রায় তৈরি সৈকত নগরী দিঘা

Date:

Share post:

মাসির বাড়িতে আদর আপ্যায়নের পর এবার জগন্নাথ- বলরাম- সুভদ্রা যাবেন নিজের বাড়িতে। শনিবার পুনর্যাত্রায় লক্ষ লক্ষ ভক্ত রথের রশিতে টান দিতে সামিল হবেন ধর্মীয় ঐতিহ্যে। এবার সৈকত নগরী দিঘায় (Digha) প্রথমবার রথযাত্রা (Rathayatra) পালিত হয়েছে। রথের দিন রশিতে টান দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পুনর্যাত্রায় তিনি দিঘা যাচ্ছেন না ঠিকই কিন্তু দর্শনার্থী, ভক্ত এবং পর্যটকদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেই মতো পুলিশ-প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। সোজা রাতের মতো উল্টোরথেও সৈকত শহরে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা।

দিঘার জগন্নাথধাম (Jagannath Dham Digha) ট্রাস্টের তরফে জানা গেছে, শনিবার দুপুর দুটো নাগাদ গড়াতে পারে রথের চাকা। তার আগে সকাল থেকে চলবে বিভিন্ন আচার বিধি এবং ভোগ অর্পণের কাজ। মূল রথের মতো উল্টোরথ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য শুক্রবার জগন্নাথ মন্দিরে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের (Manoj Panth) পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সুজিত বসু, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং পুলক রায়। এছাড়াও ছিলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি এবং জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য। রথযাত্রার মতোই উল্টোরথের ভিড়ের আন্দাজ করে নিরাপত্তার বলয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে গোটা দিঘাকে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো থাকছে একটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স (Air Ambulance)। রাখা হচ্ছে দমকল এবং মেডিক্যাল টিম। বিকেল চারটেয় রথ টানা সম্পন্ন হবে। জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, মূল রথের মতো আমরা উল্টোরথেও সমস্ত নিরাপত্তা এবং নজরদারির ব্যবস্থা করেছি। শুক্রবার রাত থেকেই যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে দিঘায়। জানা গেছে, মূল রথের মতোই বাঁশের ব্যারিকেডের মধ্য থেকে রথের রশিতে স্পর্শ করতে পারবেন ভক্তরা। গোটা রথযাত্রায় নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন থাকবে প্রায় দেড় হাজার পুলিশ। এছাড়াও থাকবে ড্রোন এবং সিসি ক্যামেরা। পিএইচইর তরফ থেকে ইতিমধ্যে বেশ কিছু ক্যাম্প করে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে জগন্নাথদেবের মাসির বাড়ির সামনে সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের তরফ থেকে ভক্তদের জগন্নাথের মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। উল্টোরথের দিনও মাসির বাড়ি কমিটির তরফ থেকে ১০ হাজার মানুষকে অন্নপ্রসাদ বিতরণ করা হবে। ইতিমধ্যে সৈকত শহরে উল্টোরথে লক্ষাধিক মানুষের সমাগমের অনুমান করে সকলের জন্য প্রসাদের ব্যবস্থা করেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। রঙিন আলোয় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা সৈকত শহরকে। চারিদিকে জয় জগন্নাথের সুর। শুক্রবার বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো দিঘায় পৌঁছে গিয়েছেন পাঁচ মন্ত্রী। তাঁরাই উল্টোরথ সঠিকভাবে পরিচালনা করবেন। মন্দির সূত্রে খবর, জগন্নাথ মন্দিরে রথ যাওয়ার পর তিনদিন রথের মধ্যেই অধিষ্ঠিত থাকবেন জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা। এরপর ৮ তারিখ তাঁদের নীলাদ্রি বিজয়ের মাধ্যমে গর্ভগৃহে প্রবেশ করানো হবে। মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো রথে সমস্তরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মূল রথের মতোই উল্টোরথেও থাকবে সিসি ক্যামেরা এবং এলইডি স্ক্রিন।

 

spot_img

Related articles

কলকাতার আকাশে দুর্যোগের মেঘ! একাদশীতে কমলা সর্তকতা তিলোত্তমায় 

পাঁচ দিনের আনন্দের পর সপরিবারে কৈলাসে পাড়ি দিয়েছেন উমা। শাস্ত্র মেনে দশমীতে দেবীর দর্পণ-ঘট বিসর্জন হলেও এখনও মৃন্ময়ী...

১ মিনিটের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড সন্দেশখালির একাধিক গ্রাম, বিধায়কের উদ্যোগে দ্রুত ত্রাণ-উদ্ধার

এক মিনিটের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড সন্দেশখালির (Sandeshkhali) একাধিক গ্রাম। বৃহস্পতিবার, বিকেল চারটে নাগাদ পাথরঘাটা এলাকায় টর্নেডোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায়...

দুর্গোৎসবের দশমীতে কাঁদল প্রকৃতিও: উত্তরে ধসে বিপর্যয়

ফের অতি গভীর নিম্নচাপ। নবমীতে কিছুটা রেহাই দিলেও দশমী থেকেই উত্তর ও দক্ষিণ – দুই বঙ্গেই বৃহস্পতিবার থেকে...

বাংলায় বড় বিনিয়োগ করতে চলেছে JSW: সুরুচির পুজোয় জানালেন সজ্জন, সঙ্গীতা করতে চান আর্ট স্কুল

বাংলায় বড় বিনিয়োগ করতে চলেছে JSW গ্রুপ। বিজয়া দশমীতে সুরুচি সংঘের পুজোয় এসে এই আশার কথাই শোনালেন সংস্থার...