মালদহ জেলার মানিকচকে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে উঠেছে। ঘটনায় রাজনৈতিক রঙ লেগেছে বলেই অভিযোগ তুললেন মানিকচকের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। তাঁর অভিযোগ, “বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে অযথা রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে সিপিএম ও বিজেপি। এটা নোংরা রাজনীতি। ছাত্রের পরিবারকে সবরকম সাহায্য করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই প্রকৃত কারণ সামনে আসবে।” ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই নেমেছে মানিকচক থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে আত্মহত্যার সম্ভাবনাকেই তদন্তের মূল দিশা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এই মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মানিকচক ব্লকের ভূতনীর হীরানন্দপুর অঞ্চলের কেদারটোলা এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার গভীর রাতে মানিকচকের একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শ্রীকান্ত মণ্ডলের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। কিন্তু মৃত ছাত্রের পরিবার সেই দাবি মানতে নারাজ। পরিবারের অভিযোগ, বিদ্যালয়ে কোনও কারণে শ্রীকান্তকে মারধর করা হয়েছিল। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই হয়তো সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে কিংবা তাকে হত্যা করে পরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সন্দেহে মৃত্যুর পর চারদিন ধরে দেহ সৎকার না করে, বরফে সংরক্ষণ করে রেখেছেন তাঁরা। পরিবারের তরফে সঠিক তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।

মৃত ছাত্রের দেহ ময়নাতদন্তের পর গত বৃহস্পতিবার পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। তারপরও কেন সৎকার করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। রবিবার মৃত ছাত্রের বাড়িতে যান মানিকচক এলাকার সিপিএম নেতা দেবজ্যোতি সিনহা ও বিজেপির মালদহ জেলা সাধারণ সম্পাদক গৌড় চন্দ্র মন্ডল। এই ঘটনাকেই ইঙ্গিত করে তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগ, “ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে দুই পক্ষই রাজনৈতিক রঙ চড়াতে ব্যস্ত। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়।” বছাত্র মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে মালদহের রাজনৈতিক মহল। একদিকে তদন্ত চলছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক তরজা– দুয়ের চাপে পড়ে এখনও বিচার পায়নি মৃত ছাত্রের পরিবার।

আরও পড়ুন – স্বর্ণবেশে জগন্নাথ! মন্দিরের বাইরে রথেই বিরাজমান তিন ভাইবোন

_

_

_

_

_

_

_
_
_
_
_