গোটা বিশ্ব যখন বন্যপ্রাণ রক্ষায় রীতিমত নীতি নির্ধারণ ও পরিবর্তন করে লড়াই চালাচ্ছে, সেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে পোষা বাঘ-সিংহের সংখ্যায় ব্যাপক বৃদ্ধি গোটা বিশ্বের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে সেখানে বাঘ (tiger) ও সিংহের (lion) সংখ্যা যেমন ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে, অন্যদিকে বেড়েছে চোরাই (smuggling) পশু চালান। বেড়েছে পশুর প্রতি অপরাধ। যার ফলে বাঘ দিবসে বাঘের সংখ্যা বাড়লেও তা বাঘের স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা লাভজনক, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
থাইল্যান্ডে বাড়িতে বা ক্যাফেতে বাঘ-সিংহ পোষা আইনত স্বীকৃত। সরকারি আইনকে ভরসা করেই চিড়িয়াখানার পাশাপাশি খামার, ক্যাফে, গৃহপালিত বাঘের সংখ্যা ব্যাপক বেড়েছে। থাইল্যান্ডে (Thailand) সরকারি হিসাবে বাঘের সংখ্যা যেখানে ২২৩, সেখানে পশুপ্রেমী সংগঠনগুলির হিসাবে সেই সংখ্যাটা ৫০০-র কাছাকাছি। লাওসেও (Laos) বাঘ-সিংহ পালন স্বীকৃত। সেখানেও সরকারি হিসাবে বাঘ মাত্র ২টি। অথচ কনসার্ভেশন অন ইন্টারন্যাশানাল ট্রেড ইন এনডেনজার্ড স্পিসিস-এর (CITES) হিসাব অনুযায়ী লাইসেন্সের বাইরে বাঘ পোষা হয়েছে।
এর ফলস্বরূপ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সর্বত্র বাঘের চামড়া, দাঁত ও হাড়ের কালোবাজারির (smuggling) রমরমা চলছে। সেই সঙ্গে সমান তালে বেড়েছে এই সব চোরাই সামগ্রীর দাবি। সেখানেই প্রশ্ন উঠেছে কীভাবে বেআইনি এইসব দ্রব্যের আমদানি বাড়ল। বেড়েছে বেআইনিভাবে লাইগার ও টিগনের প্রজনন।
সাম্প্রতিক সময়ে চিনের টিকটক অ্য়াপের কল্যাণে এই দেশগুলিতে পোষ্যদের নিয়ে ভিডিও বানানোর প্রবণতা বেড়েছে। এক একজন টিকটকার কোটি টাকা উপার্জন করছেন নিজেদের ভ্লগে। ভ্লগারদের দাবি, বাঘ বা সিংহকে যে বাড়ির কুকুর ছানার মতো ভালোবাসা যায়, তার প্রচার করতেই তাঁরা এই ধরনের ভিডিও বানান।
আরও পড়ুন: ওবিসি জটে জয়েন্ট এন্ট্রান্স: সরকার ও বোর্ডের কাছে রিপোর্ট তলব হাই কোর্টের
যেখান থেকে চোরাই কারবারের শুরু তা হল বাঘ ও সিংহের ব্যাপক প্রজনন (breeding)। এক একটি খামারে এক একটি বাঘ বছরে একবার বা দুবার অন্তত পাঁচটি করে শাবকের জন্ম দেয়। সিংহের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাটা আরও বেশি। সেই সব শাবক এক একটি স্থানীয় মুদ্রার ৫ লক্ষে। চাহিদা বেশি থাকলে তার দাম ৮ লক্ষ পর্যন্ত হয়। বছরে প্রতিটি খামারে প্রায় ৯০টি করে বাঘ সিংহ পালন হয়। সেই হারে বিক্রিও হয়। আর তারই পথ ধরে চোরা চালান।
–
–
–
–
–
–
–
–