সাম্প্রতিক সময়ে যাত্রী দুর্ভোগ এবং পরিকাঠামোর সমস্যা নিয়ে বারবার আলোচনায় উঠে এসেছে কলকাতা মেট্রো। পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়া থেকে শুরু করে লাইনে জল ঢোকা, প্ল্যাটফর্মে ফাটল—নিত্যদিন যেন কোনও না কোনও সমস্যা লেগেই রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মালা রায়—গত পাঁচ বছরে মেট্রোর রক্ষণাবেক্ষণে কত টাকা খরচ হয়েছে?
সংসদে সেই প্রশ্নের লিখিত জবাব দিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি জানান, গত পাঁচ বছরে কলকাতা মেট্রোর স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম, শেড ও লাইনের রক্ষণাবেক্ষণে বরাদ্দ হয়েছে মোট ২৮ কোটি টাকা। তবে মালা রায়ের চাওয়া অনুযায়ী বর্ষভিত্তিক ব্যয় বিবরণ দেননি রেলমন্ত্রী।
উল্লেখযোগ্যভাবে, রেলমন্ত্রীর এই জবাবের ঠিক পরেই কবি সুভাষ স্টেশনে পিলারে ফাটল ধরা পড়ে। তড়িঘড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয় স্টেশন। জানা গেছে, পুরো মেরামতের কাজ শেষ হতে সময় লাগতে পারে ৯ মাস পর্যন্ত। এর ফলে এখন আপাতত শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনই উত্তর-দক্ষিণ শাখার শেষ স্টেশন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজার হাজার নিত্যযাত্রী।
যাত্রীদের অভিযোগ, সময়মতো রক্ষণাবেক্ষণ হলে এই ধরনের বড় বিপর্যয় এড়ানো যেত। তবে মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, নিয়ম মেনেই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলে এবং পর্যাপ্ত নজরদারিও করা হয়।
রেলমন্ত্রী আরও জানান, কলকাতা মেট্রোর কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৭২ সালে। সেই থেকে ২০১4 পর্যন্ত ৪২ বছরে বসেছে মাত্র ২৮ কিলোমিটার লাইন, যেখানে খরচ হয়েছিল ৫,৯৮১ কোটি টাকা। অন্যদিকে, ২০১৪ থেকে ২০২৫-এর মধ্যে ১১ বছরে বসেছে ৪১ কিলোমিটার নতুন লাইন, খরচ হয়েছে ২৫,৫৯৩ কোটি টাকা। ভবিষ্যতে আরও ৫৬ কিমি মেট্রো লাইনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে জমি অধিগ্রহণ এবং রাজ্য সরকারের ‘অসহযোগিতা’র কারণে ২০ কিমির কাজ আপাতত স্থগিত। নাগরিক পরিষেবায় মেট্রোর ভূমিকা প্রশ্নাতীত হলেও, ক্রমবর্ধমান ভাঙন, বিলম্ব এবং ভোগান্তি নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। প্রশ্ন উঠছে, বিপুল পরিমাণ বরাদ্দ কি সত্যিই সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে?
আরও পড়ুন – অগাস্টে শুরু ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’, নবান্নের বৈঠকে ত্রিস্তরীয় বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
_
_
_
_
_
_
_
_
_