২০২৪ সালের নভেম্বরে মধ্যপ্রদেশের এক কৃষক সারের অভাবের কারণে মারা গিয়েছেন। এবছর জুলাই মাসে এক কৃষক পরিবারের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ঘটেছে যেখানে সার কেনার ধার শোধ করতে না পেরে গোটা পরিবার আত্মঘাতী হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। সরকারের যখন ভর্তুকি দিয়ে সার বাজারে এনে কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর কথা, সেই সময়ে কৃষকের সারের জন্য বরাদ্দ টাকা খরচ করছেন আমলারা। চাঞল্যকর হলেও এটাই সত্যি বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে (Madhyapradesh)। যে রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকারের কোনও প্রকল্পের অভাব নেই, সেখানে কৃষকদের জন্য বরাদ্দ টাকায় কীভাবে সরকারি গাড়ির তেল ভরা হল, প্রশ্ন ক্যাগের (CAG)।

ডবল ইঞ্জিন মধ্যপ্রদেশে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষ থেকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষ পর্যন্ত কৃষকদের (farmers) জন্য বরাদ্দ টাকার যে হিসাব পাওয়া গিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ৯০ শতাংশ টাকা খরচ হয়েছে সরকারি আধিকারিকদের গাড়ি চড়তে। ফার্টিলাইজার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (FDF) যাচাই করতে গিয়ে ক্রম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল-এর (CAG) হিসাবে ধরা পড়ে এই বিরাট গরমিল। যেখানে দেখা যাচ্ছে, এই সময়ের মধ্যে এই খাতের টাকার মধ্যে কৃষকদের সহযোগিতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাহায্য, প্রশিক্ষণের খাতে খরচ করা হয়েছে মাত্র ৫.১০ লক্ষ টাকা। আর সেখানে বিভিন্ন আমলার গাড়ি চড়া ও গাড়ির চালকের জন্য খরচ হয়েছে ৪.৭৯ কোটি টাকা।

ক্যাগের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এফডিএফ (FDF) ব্যবহার করার কথা কৃষকদের সারের ভর্তুকি, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আর্থিক সহযোগিতা ও কৃষি সমবায়ে ব্যয় করার জন্য। আর মধ্যপ্রদেশে শুধুমাত্র ২০টি গাড়ির পিছনে ব্যয় হয়েছে ২.২৫ কোটি টাকা, যা নেওয়া হয়েছে এই কৃষকদের তহবিল থেকে। তহবিলের টাকা কৃষকদের জন্য খরচ হলে তাদের উপর থেকে ভর্তুকির ১০.৫০ কোটি টাকা আরও বেশি দেওয়া সম্ভব হত। ফলে কৃষকরা সরকারি সারের সুবিধা আরও বেশি পেতেন। সারের অভাবে ছয় বছর ধরে কৃষকদের সমস্যার সম্মুখিন হতে হত না।

আরও পড়ুন: যাবজ্জীবন কারাদণ্ড: প্রথম ধর্ষণের অভিযোগে প্রজ্জ্বল রেভান্নাকে সাজা শোনালো আদালত

মূলত এই সময়কালে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। গোটা ঘটনা বিজেপির নেতা মন্ত্রীদের চোখের আড়ালেই হয়েছে, এমনটাও দাবি বর্তমান মোহন যাদব প্রশাসনের। সেই সঙ্গে তারা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে এক আজব যুক্তিও তুলে ধরেছে। তাদের দাবি, প্রকল্পের পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণে নজরদারির প্রয়োজন। তার জন্য আমলাদের গাড়িতে চড়াই প্রয়োজন। আর সেখানেই স্পষ্ট, দুর্নীতি করে তার সমর্থন দিতেও কীভাবে তৎপর মধ্যপ্রদেশের ডবল ইঞ্জিন সরকার।

–

–
–
–

–
–
–
–
–